জুবাইদা রহমানের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় বুধবার
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের আপিলের ওপর রায়ের জন্য ২৮ মে দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২১ মে হাইকোর্ট জুবাইদা রহমানের করা আপিল শুনানির জন্য ২২ মে দিন রাখেন। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত আজ বেলা দুইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ করেন।
আদালতে আপিলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূইয়া শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এই মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ। রায়ে দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড (৬ ও ৩ বছর, একসঙ্গে চলবে) এবং জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৬ মে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুবাইদা রহমান, যা ১৩ মে মঞ্জুর করেন আদালত। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং জামিন মঞ্জুর করেন। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে আজ আদালত রায়ের জন্য ২৮ মে দিন নির্ধারণ করলেন।
পরে আপিলকারীপক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, দুদিন শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৮ মে দিন রেখেছেন। যে সম্পত্তিগুলো তারেক রহমানের নামে দেখানো হয়েছে, এর একটিও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত নয় বলে শুনানিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো মামলা প্রমাণ না হলে আপিলকারী যদি খালাস পান, তাহলে যিনি আপিল করতে পারেননি, তাঁর ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হয়। এমন তিন-চারটি মামলায় ইতিমধ্যে তারেক রহমান খালাস পেয়েছেন। যদি জুবাইদা রহমান খালাস পান, তাহলে খালাসের বেনিফিট আপিল না করলেও তারেক রহমান পেতে পারেন। যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা প্রমাণিত হয় না। এমন নজির রয়েছে। এ মামলায় জুবাইদা রহমান খালাস পাবেন এবং ওনার স্বামী তারেক রহমানও খালাস পাবেন বলে আশা করেন জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।