জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি

নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার চেয়ে সমাবেশ। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েছবি: প্রথম আলো৷

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেছেন, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের সঙ্গে হল ও ক্লাসে তাঁরা একসঙ্গে অবস্থান করতে পারবেন না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ সমাবেশ হয়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরাফা খাতুন, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেরিন সকাল, নাহিদা সুলতানাসহ কয়েকজন বক্তব্য দেন। সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ও মাহিন সরকারও সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেদিনও চুপ ছিল, আজও চুপ। এমনও শোনা যাচ্ছে আমাদের নাকি আবেগের বশে আক্রমণ করা হয়েছে। এখন সবাই হয়ে গেছে চাপে পড়ে ছাত্রলীগ। এসব কথা বলে এখন হল ও বিভাগগুলোতে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।’

এই সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আমরা লীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাসে বসব না, বসব না, বসব না। একই হলে লীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে থাকব না, থাকব না, থাকব না। যদি প্রশাসনের কোনো ব্যক্তির প্রত্যক্ষ মদদে লীগের কোনো সন্ত্রাসীকে পুনর্বাসন করা হয়, তাকেও লীগের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

হামলার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা না হলে সারা দেশের নারী শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসবেন এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষার্থীরা বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন নুসরাত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আজ এক মাসের বেশি সময় হয়েছে, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগের যে সন্ত্রাসীরা নারীদের টার্গেট (লক্ষ্য) করে আক্রমণ করেছে, প্রশাসন তাদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনকে বলব, আমাদের এই নিরাপদ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। তৎকালীন উপাচার্য, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর এই হামলার জন্য দায়ী। তাঁদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, ছাত্রলীগের যেসব সন্ত্রাসী আমাদের বোনদের আহত করেছে, তারা কীভাবে এখনো ক্লাস করে? একই সঙ্গে আমরা সরকারের কাছে জবাবদিহি চাই, কেন এখনো সেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়? বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে নারীদের ওপর ছাত্রলীগ-পুলিশ লীগ যে অত্যাচার করেছে, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’