সহযোগিতার ভবিষ্যৎ ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা

নয়াদিল্লিতে গতকাল বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করছবি: বাসস

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দুই দেশের জাতীয় রূপকল্পগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

গতকাল বুধবার ভারতের নয়াদিল্লিতে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তাঁদের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেন। গত রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় উঠেছে, সেটিকে আরও ঘনিষ্ঠ ও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, সীমান্তে হত্যা নয়, সৌহার্দ্য বজায় রাখা, আন্তদেশীয় যোগাযোগ বৃদ্ধিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরকে ভারতের ব্যবহারের কার্যকর সূচনা, বিদ্যুৎ–শক্তির উৎসজনিত সহায়তার বিষয়গুলোর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকারসহ তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন এবং মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়েও একযোগে কাজ করার বিষয়ে খোলামেলা ও হৃদ্যতাপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের আলোচনায় আন্তসীমান্ত সংযোগ; অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অংশীদারত্ব; প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসম্পদ; জনগণের মধ্যে মেলবন্ধনসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিস্তৃত ক্ষেত্রের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। তাঁরা ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’–এর রূপকল্পসহ দুই দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সহযোগিতার ভবিষ্যৎ ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করেছেন। দুই নেতা অভিন্ন স্বার্থের আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়েও মতবিনিময় করেন।

‘আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা’

বাসস, নয়াদিল্লি জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গতকাল সকালে দিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এক ঘণ্টার বৈঠকে তাঁরা শান্তি, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন–সংক্রান্ত বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন থেকে শুরু করে বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’ তিনি বলেন, উভয় পক্ষ একমত হয়েছে যে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শান্তি ও উন্নয়নের পূর্বশর্ত এবং এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের বিরাজমান পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের শান্তি নিশ্চিত করতে তারা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করবে, সে বিষয়েও দুই পক্ষ আলোচনা করেছে।

হাছান মাহমুদ তিন দিনের সফরে ভারতের রাজধানীতে অবস্থান করছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি নয়াদিল্লি পৌঁছান। নতুন সরকারের শপথ নেওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এটাই হাছান মাহমুদের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর।