সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম উপজেলা পর্যায়ে পাঠাতে নির্দেশ

হাইকোর্টফাইল ছবি

উপজেলা পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবিলম্বে অ্যান্টিভেনম পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষধর প্রাণীর (যেমন সাপ) বিষের প্রতিষেধক হিসেবে অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের আগামী ২৮ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সব উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম পাঠানো নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো মানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হবে।

এর আগে ‘সাপেড় কামড়ে মৃত্যু, স্বাস্থ্য খাতে এক নীরব সংকট’ শিরোনামে গত ১৭ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর আগে গত ১০ জুলাই ‘৫ মাসে সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু’ শিরোনামে একটি অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে আসা এ ধরনের বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী গতকাল রোববার রিটটি করেন, যার ওপর আজ সোমবার শুনানি হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

পরে আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। প্রচুর সংখ্যক লোক সাপেড় দংশনের শিকার হন ও মারা যান। বছরে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ মারা যান এবং দিনে ২০ জন করে মারা যান বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে। তাই জনস্বার্থে রিটটি করা হয়। শুধু জেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায়, উপজেলা পর্যায়ে পাওয়া যায় না। শুনানি নিয়ে আদালত রুল ইস্যু করেছেন এবং বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে সাপের বিষের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন অ্যান্টিভেনম যেন পৌঁছে দেওয়া হয়।

রুলে গ্রাম এলাকায় নির্দিষ্টভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম নিশ্চিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালগুলোতে অবিলম্বে অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।