এই সময়ে মানবিক নাকি মেধাবী মানুষ, নাকি মানবিক মেধাবী মানুষ প্রয়োজন? পক্ষ আর বিপক্ষ দলের মধ্যে সমানে সমান যুক্তিতর্ক চলল। শেষ পর্যন্ত মানবিক মানুষের পক্ষে বিতর্ক করে জয় পেল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। এই দলটিই এবারের পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৫টি জেলার শ্রেষ্ঠ দল ও ঢাকার ৫টি সেরা দল নিয়ে এ পর্ব হয়। দলীয় বিতর্ক ছাড়াও এতে ছিল বারোয়ারি বিতর্ক ও কুইজ।
চূড়ান্ত পর্বের বিষয় ছিল, ‘এই সময়ে মেধাবী মানুষের চেয়ে মানবিক মানুষ বেশি দরকার’। এতে রানার্সআপ হয়েছে ঢাকার সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ ছাড়া সেরা বিতার্কিক হয়েছে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল দলের সদস্য আবরার রইস রোহান।
চ্যাম্পিয়ন দল ও সেরা বিতার্কিকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিতর্ক করেছে, তা তাঁরা নিজেদের সময়েও এভাবে পারেননি। তিনি শিক্ষার্থীদের যুক্তিতর্কে অভিভূত। তিনি আরও বলেন, মেধার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানবিকতারও বিকাশ জরুরি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, বীরশ্রেষ্ঠ ও দেশে গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দেওয়া নূর হোসেনদের মতো মানুষদের কথা ভোলা যাবে না। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের প্রতিযোগিতায় উদ্বুদ্ধ করায় অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
এ প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে কুইজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১০ জন করে সেরা ২০ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন টি কে গ্রুপের মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক মোহাম্মাদ মোফাচ্ছেল হক। তিনি বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি তাঁরা শিক্ষা, চিকিৎসা ও মনন বিকাশে কাজ করছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন দেশের বাইরেও হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও পেরেরা বলেন, সবাই বিজয়ী। বিজয়ী মনোভাব নিয়ে পথ চলতে হবে।
পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষকদের কথা মনে রাখতে হবে, তাঁদের সম্মান করতে হবে।
চূড়ান্ত পর্বের বিতর্কে বিচারক হিসেবে ছিলেন একুশে হল ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক রাশেদুল ইসলাম পল্লব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা আতিক স্মৃতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক উত্তম রায় ও রাশেদুল আলম রাসেল এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক জাফর সাদিক।
আয়োজনের প্রচার সহযোগী নাগরিক টিভি এবং সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো বন্ধুসভা। এ ছাড়া মেডিকেল সহযোগী হিসেবে ছিল ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল।