অনুবাদকের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতে হবে: অধ্যাপক নিয়াজ জামান

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘নেহরীন খান স্মৃতি বক্তৃতা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান ২০২৫’–এর অতিথিরাছবি: প্রথম আলো

অনুবাদকের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া যথার্থ ও প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিক অধ্যাপক নিয়াজ জামান। তিনি বলেন, একজন অনুবাদক দুটি ভাষার মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করেন। তিনি মানুষের মধে৵ বন্ধুত্ব সম্ভব করে তোলেন এবং নতুনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আজ বুধবার সকালে  ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নেহরীন খান স্মৃতি বক্তৃতা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান ২০২৫’–এ তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে একক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক নিয়াজ জামান। তাঁর বক্তৃতার শিরোনাম ছিল ‘লিটারারি ট্রান্সলেশনস অ্যান্ড ট্রান্সলেটরস: বাংলাদেশ অ্যান্ড বিয়ন্ড’ (সাহিত্য অনুবাদ ও অনুবাদক: বাংলাদেশ এবং বিশ্বপ্রসঙ্গ)।

অধ্যাপক নিয়াজ জামান তাঁর লিখিত বক্তব্যের শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুবাদ সাহিত্য এবং অনুবাদক প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি দেশের অনুবাদ সাহিত্য নিয়েও কথা বলেন।  

একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক নিয়াজ জামান মনে করেন, দেশে অনুবাদকের গুরুত্ব বাড়ানো উচিত। অনুবাদক ছাড়া বিশ্বের বহু সাহিত্যকর্ম পড়ার সুযোগ পাওয়া যেত না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাষার ওপর দক্ষতা রয়েছে, সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন এবং সৃজনশীল ও সংবেদনশীলভাবে অনুবাদ করতে পারেন, এমন অনুবাদকের প্রয়োজন।

দেশের সেরা সাহিত্যগুলোর অনুবাদ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন অধ্যাপক নিয়াজ জামান। এ সময় দেশের অনুবাদকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি অনুবাদ করতে চান, তাহলে যে ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে (লক্ষ্যভাষা) সে ভাষার ওপর খুব ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। মূল লেখার ভাষার চেয়ে লক্ষ্যভাষায় ভালো থাকা বেশি জরুরি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ফকরুল আলম। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শামস্‌ রহমান। সমাপনী বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সমাপনী বক্তব্য শেষে অধ্যাপক নিয়াজ জামানকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও নেহরীন খান স্মৃতি তহবিলের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি এয়ার কমোডর (অবসরপ্রাপ্ত) ইসফাক ইলাহী চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক কানিজ ফাতেমা।

প্রসঙ্গত, নেহরীন খান ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রয়াত আকবর আলি খান ও সানবিমস স্কুলের শিক্ষক প্রয়াত হামীম খানের একমাত্র সন্তান। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ করেন। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালে ৩৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ‘নেহরীন খান স্মৃতি তহবিল’ নামে সাহিত্যিক সম্মাননা ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে।