ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্র: র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল
ফাইল ছবি

জার্মান সম্প্রচারমাধ্যম ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রে র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ কথা বলেছেন।

ব্রিফিংয়ে ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ও সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে যে বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বিচারবহির্ভূত ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এই প্রথম র‌্যাবের ভেতরের দুজন বাহিনীর অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অনেক ঘটনা সামনে চলে আসে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জানতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা (র‌্যাবের ওপর) বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে কি না।

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি এখান থেকে কোনো আগাম পদক্ষেপের কথা বলতে পারছি না। তবে এই নিবন্ধ ও ভিডিওতে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খতিয়ে দেখব। বাংলাদেশ সরকারও একই কাজ করবে বলেই আমরা আশা করি।’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।  

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাব এবং বাহিনীর তৎকালীন ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। এর মধ্যে ডয়চে ভেলে ও নেত্র নিউজের এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, র‌্যাবকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘র‌্যাব দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য র‌্যাবকে ব্যবহার করা হচ্ছে না।’ এর আগে ৩ এপ্রিল ওই তথ্যচিত্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, এটি হাসির খোরাক আরকি। র‍্যাব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে না। সংস্থাটি নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে।

র‌্যাবের কর্মকাণ্ড নিয়ে কয়েক মাস ধরে অনুসন্ধান চালায় ডয়চে ভেলের ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট। ৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশের “ডেথ স্কোয়াডের” ভেতরের কথা’ শিরোনামে প্রচারিত ওই তথ্যচিত্রে র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়ানোর অভিযোগ উঠে আসে।