খুনের মামলায় দুজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন আটজনের

আদালত
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাহমুদুল হক নামের এক ব্যক্তিকে খুনের মামলায় দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আবুল হাসনাত এই রায় দেন।

সরকারি কৌঁসুলি দীন মণি দে প্রথম আলোকে আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রায় ২২ বছর আগে ওই খুনের ঘটনা ঘটে।

সরকারি কৌঁসুলি বলেন, আসামি শামসুল ইসলাম ও সৈয়দ আহম্মদকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর আসামি নুরুল আলম, আবুল কাশেম, নাজিম উদ্দিন, আইয়ুব আলী, আলমগীর, জসিম উদ্দিন, জহিরুল ইসলাম ও আজম বাদশাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই আসামিদের আট হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দীন মণি দে বলেন, সব আসামিকে পৃথক আরেকটি ধারায় ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। আসামি আবদুল মালেককে খালাস দেওয়া হয়েছে। মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় আসামি মো. ইউসুফ ও নাসির উদ্দিনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ৩ নভেম্বর লোহাগাড়া থানার আমিরাবাদ ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকায় মাহমুদুল হককে মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। দুই দিন পর ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই আলী আহমেদ বাদী হয়ে ১১ নভেম্বর ১৩ জনের বিরুদ্ধে লোহাগাড়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০২ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালতে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে বলা হয়, জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটে। ২০০৬ সালের ৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরু হয়। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সাজা হওয়া আসামিদের মধ্যে সৈয়দ আহম্মদ, জহিরুল ইসলাম, আবুল কাশেম, আইয়ুব আলী ও জসিম উদ্দিন রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

রায়ের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত মাহমুদুলের ভাতিজা শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চ আদালতেও যেন এই রায় বহাল থাকে। খালাস পাওয়া এক আসামির রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তাঁরা। তাঁর চাচাকে খুনের পরের বছর আসামিরা তাঁর বাবাকে ২০০২ সালে খুন করেন। এ মামলায় ২০০৭ সালে ১২ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।