ভারতীয় জেলেদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয় জেলেদের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য ও বানোয়াট অভিযোগের বিষয়ে চরম উদ্বেগ ও গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এই অবস্থান তুলে ধরেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আস্থা, সদিচ্ছা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে, এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, কোনো অবস্থাতেই আটক জেলেদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়নি। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এ ধরনের দুর্ব্যবহার বা শারীরিক নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ উল্লেখ করতে চায় যে আটক ৯৫ ভারতীয় জেলে–ক্রু সদস্যকে বাংলাদেশে অবস্থানের সময় যথাযথ আচরণ করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের যথাযথভাবে কনস্যুলার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, যাঁরা আটকের সময় জেলেদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ জানুয়ারি ভারতীয় জেলেদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার সময় এবং ৪ জানুয়ারি মোংলা থেকে জেলেদের যাত্রার সময় ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো সব ভারতীয় জেলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেছে, তাঁরা শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। সামুদ্রিক সীমান্তের দিকে তাঁদের যাত্রার সময়, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও ব্যবস্থা দিয়েছিল। জেলেদের পারস্পরিক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ভারত সরকারের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং সহযোগিতামূলকভাবে মানবিক সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতিকে প্রকাশ করে।
দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে, এমন ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ এড়াতে বাংলাদেশ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতে আটক ৯০ বাংলাদেশি জেলে–ক্রু এবং বাংলাদেশে আটক ৯৫ ভারতীয় জেলে–ক্রুকে ৫ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমান্তরেখার কাছে সফলভাবে প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মৎস্য বিভাগ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ৯০ বাংলাদেশি জেলে–ক্রু সদস্যকে গ্রহণ করে এবং ৯৫ ভারতীয় জেলে–ক্রু সদস্যকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করে।
ওই দিন একই সঙ্গে আটক জাহাজের বিনিময় সম্পন্ন হয়। দুটি বাংলাদেশি মাছ ধরার জাহাজ ‘এফভি লায়লা-২’ এবং ‘এফভি মেঘনা-৫’ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। একইভাবে ছয়টি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকা ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।