শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দেওয়া উচিত: আ ন ম মুনিরুজ্জামান

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনিরুজ্জামান। আজ শনিবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে’ছবি: প্রথম আলো

আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত পাঠানো উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনিরুজ্জামান।

আ ন ম মুনিরুজ্জামান বলেছেন, বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতকে বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের এক কর্ম অধিবেশনে এ কথা বলেন মুনিরুজ্জামান। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন’ শীর্ষক তিন দিনের এই সম্মেলন আয়োজন করেছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সম্প্রতি দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন।

ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আজ শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন’–এর উদ্বোধনী দিনে ‘ফ্র্যাকচার্ড অর্ডারস, ফ্লুইড লয়্যালটিজ: পাওয়ার পলিটিকস ইন দ্য পোস্ট-অ্যালাইনমেন্ট এজ’ শিরোনামের প্লেনারি সেশনে আলোচকেরা
ছবি: প্রথম আলো

এই বিচারের প্রসঙ্গ টেনে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে, যার ভিত্তিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এটি এমন একটি আইনব্যবস্থা, যার প্রতি আমাদের সব প্রতিবেশীরই সম্মান দেখানো উচিত। বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার প্রতিও সম্মান দেখানো উচিত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অন্তর্বর্তী সরকার একাধিকবার ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরও পুনরায় আহ্বান জানায়। কিন্তু নয়াদিল্লি তাতে কোনো সাড়া এখনো দেখায়নি।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুনিরুজ্জামান বলেন, এই চুক্তির অধীনে ভারত আইনগতভাবেই প্রায় বাধ্য হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে।

যদি বাংলাদেশ কিছুসংখ্যক ভারতীয়কে আশ্রয় দিয়ে রাখত এবং নয়াদিল্লির অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের ফিরিয়ে না দিত, তাহলে ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হতো, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘যদি এমন পরিস্থিতি হতো, তাহলে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশে যারাই দোষী সাব্যস্ত হতো, আইনগতভাবে তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ বাধ্য থাকত।’

আরও পড়ুন

সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে ‘ফ্র্যাকচার্ড অর্ডারস, ফ্লুইড লয়্যালটিজ: পাওয়ার পলিটিকস ইন দ্য পোস্ট-অ্যালাইনমেন্ট এজ’ শিরোনামের প্লেনারি সেশনে আ ন ম মুনিরুজ্জামান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার টেইলরস ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার জুলিয়া রোকনিফার্ড; আগোরা স্ট্র্যাটেজি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো জোভান রাটকোভিচ; ব্রাজিলের গেটুলিও ভারগাস ফাউন্ডেশনের (এফজিভি) সিনিয়র রিসার্চার লিওনার্দো পাজ নেভেস; যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মারিয়ান ভিডাউরি এবং জার্মানির আরটিএল নর্ডের ডেভিড প্যাট্রিশিয়ান।