শহরের পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। এস এম সুলতানের স্মৃতিবিজড়িত শহর এটি। এখানে বসেছিল মেধাবী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। বলা হচ্ছে নড়াইল শহর ও শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কথা। গতকাল বৃহস্পতিবার নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন গোপালগঞ্জেও দেওয়া হয়েছে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা।
নড়াইলে স্বাগত বক্তব্য দেন সেখানকার বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, পরিবারকে ভালোবাসতে হবে, সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে, দেশের প্রতি অঙ্গীকার থাকতে হবে।
‘মুখস্থ বিদ্যা নয়, তোমাদের ভেতরের সৃজনশীলতা কাজে লাগাতে হবে। তাই আমরা এই মঞ্চ থেকে মাদককে না বলি এবং মুখস্থ বিদ্যাকে না বলি।’ফিরোজ চৌধুরী, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক
জ্ঞান মানে শুধু জিপিএ-৫ নয় উল্লেখ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইল জেলার সভাপতি মলয় কুমার কুণ্ডু বলেন, সব ধরনের বই পড়তে হবে। মস্তিষ্ককে ইতিবাচক কাজে লাগাতে হবে।
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান বলেন, শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, সংস্কৃতি, খেলাধুলায়ও এগিয়ে থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নড়াইল বন্ধুসভার উপদেষ্টা আসলাম খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুর রহমান, নড়াইল বন্ধুসভার সভাপতি শামীম আহম্মেদ প্রমুখ।
মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে কৃতী শিক্ষার্থীদের কেউ কবিতা আবৃত্তি করে, কেউ শোনায় রবীন্দ্রসংগীত কেউবা গজল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকও এসেছিলেন। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মো. শাহাবুদ্দিন। মেয়ে সাজনীন পারভীনকে নিয়ে এসেছেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। শাহাবুদ্দিন বলেন, এমন একটা আয়োজন করার জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। ছেলেমেয়েরা অনেক উৎসাহ পাচ্ছে।
‘আদর্শবান হতে হবে’
গোপালগঞ্জের অনুষ্ঠানটি হয় শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তন (জেলা শিল্পকলা একাডেমি) চত্বরে।
সকাল ১০টা ২০ মিনিটে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা ও সরকারি বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক সাবিহা আফরোজ ও বন্ধুসভার বন্ধু আবির হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি নুতন শেখ।
অনুষ্ঠানে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওহিদ আলম লস্কর বলেন, ‘জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়ে প্রথম আলো তাদের নতুন উদ্যম তৈরি করে দিয়েছে। আমি আশা করি, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের এই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে।’
শুধু সার্টিফিকেট (সনদ) অর্জন করলে হবে না মন্তব্য করে গোপালগঞ্জের সুধীজন মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সততা, নীতি ও আদর্শবান হতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে।
প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী বলেন, ‘মুখস্থ বিদ্যা নয়, তোমাদের ভেতরের সৃজনশীলতা কাজে লাগাতে হবে। তাই আমরা এই মঞ্চ থেকে মাদককে না বলি এবং মুখস্থ বিদ্যাকে না বলি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, বন্ধুসভার সাবেক উপদেষ্টা লতিফা জামান চৌধুরী, বর্তমান উপদেষ্টা রবীন্দ্রনাথ অধিকারী, সালমা আক্তার প্রমুখ।
গোপালগঞ্জের সরকারি বীণাপাণি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত তুর মনি মঞ্চে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলে, সংবর্ধনায় যে সম্মান পেলাম, তা কোনো দিন ভুলব না।
শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল ক্রেস্ট, সনদ, নাশতা, প্রথম আলো ই-পেপার (এক মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের ৬৪ জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।