সাবেক উপমহাব্যবস্থাপকের ‘কোটিপতি’ স্ত্রী কারাগারে

আদালত
প্রতীকী ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুই মামলায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক আনিস আহমেদের ‘কোটিপতি’ স্ত্রী কামরুন নাহারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেসা শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। একই মামলায় আনিসও আসামি। তবে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুর্নীতির পৃথক দুই মামলায় ওই দম্পতি উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত এই দম্পতিকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। গতকাল তাঁরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত অসুস্থ বিবেচনায় আনিসের জামিন মঞ্জুর করেন। তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি আনিস ও তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়। দুদক ঢাকার উপপরিচালক মো. জাহিদ হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে বলা হয়, কামরুন নাহার একজন গৃহিণী। তাঁর বৈধ আয়ের কোনো উৎস নেই। তাঁর স্বামীর অবৈধ আয় দিয়ে তাঁর নামে ঢাকার বসুন্ধরায় ফ্ল্যাট, উত্তরায় পাঁচ কাঠার প্লট, সঞ্চয়পত্রসহ ১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক।

অপর দিকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কেজিডিএলের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক আনিস উদ্দিন আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে দুদক। এতে অভিযোগ করা হয়, অন্য ঠিকাদারি কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানকে ১০ তলা ভবনের কাজ পাইয়ে দেওয়া ছাড়াও আর্থিক অনিয়ম করেছেন আসামিরা। মামলার অন্য আসামিরা হলেন মো. আনিস উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী রক প্রপার্টিজের চেয়ারম্যান কামরুন নাহার, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ঠিকাদার ও মেসার্স রক প্রপার্টিজের আরেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নেছার আহমেদ এবং ঠিকাদার নুর সিন্ডিকেটের মালিক নুর মোহাম্মদ।

দুদকের মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় প্রত্যেককে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে ‘নুর সিন্ডিকেট’ নামের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের মালিকানাধীন রক প্রপার্টিজকে কাজ পাইয়ে দেয়। আসামিরা নির্মাণকাজে ৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২–এর সম্পৃক্ত অপরাধ, দুর্নীতি ঘুষ এর মাধ্যমে অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে ৯ কোটি ৯৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। ক্রয়কারী ও ঠিকাদার নিজেদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে যৌথ ও একক হিসাব খুলে এই লেনদেন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। দুটি মামলাই বর্তমানে তদন্তাধীন।