জুলাই আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসা শুরু করেছেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকেরা
জুলাই আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে শুরু করেছে সিঙ্গাপুর থেকে আসা পাঁচজন বিখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞের একটি দল। চিকিৎসক দলের দুই দিনের কার্যক্রমের প্রথম দিন শনিবার তারা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএন্ডএইচ) এবং বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালে শতাধিক রোগীর চোখ পরীক্ষা করে। এ পর্যন্ত দেওয়া আহতদের চিকিৎসা মূল্যায়ন করে এবং রোগীদের জন্য ভবিষ্যতের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রোটোকল সম্পর্কে পরামর্শ দেয়।
দ্বিতীয় দিনে রোববার তারা এই দুই হাসপাতালে আরও রোগী দেখবে এবং সোমবার রাতে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।
এই দলের সদস্যরা হলেন মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের চক্ষু ও কর্নিয়া সার্জারির প্রধান ডোনাল্ড ট্যান, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অফথালমোলজির ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ব্লাঞ্চ লিম, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক এবং রেটিনা সার্জন রোনাল্ড ইয়োহ, মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং রেটিনা–বিশেষজ্ঞ নিকোল ট্যান এবং সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের কনসালট্যান্ট চক্ষুবিশেষজ্ঞ রুবেন ফু।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বুয়েট আমরা ৯২ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের যৌথ উদ্যোগে সিঙ্গাপুরের চক্ষুবিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকেরা ইতিমধ্যে দেওয়া চিকিৎসা মূল্যায়ন করবেন এবং পরবর্তী সময়ে করণীয় কী তা নির্ধারণ করবেন।
অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘যদি তাঁদের (রোগীদের) আরও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে চিকিৎসকদের আরেকটি দল আসবে। যদি কোনো রোগীর বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা সে পরামর্শও দেবে।’
জুলাই আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে আসা এটি চতুর্থ চক্ষুবিশেষজ্ঞ দল। এর আগে একটি চীনা, একটি নেপালি এবং একটি ফরাসি দল তাঁদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে এসেছিল।
চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত কয়েক শ রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪০০ জনের বেশি এক চোখে এবং ৫৫ জন উভয় চোখে আঘাত পেয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের দেওয়া চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন চিকিৎসক রোনাল্ড ইয়োহ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় শত শত মানুষের চোখের আঘাত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছিল; কিন্তু তারা (চক্ষু হাসপাতালগুলো) অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা করেছে এবং তাদের দেওয়া চিকিৎসা দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি।’