বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে শিক্ষার মান উন্নয়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষদের জাতীয় কাউন্সিল ও বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ রোববার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষদের জাতীয় কাউন্সিল ও বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার মান অনেক উন্নত হয়েছে। শিক্ষার মান আরও উন্নত করে আমরা বিশ্বমানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই। এটা আমাদের লক্ষ্য এবং এটি অর্জনে আমাদের কাজ করতে হবে।’

শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে নিরন্তর পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে যোগ্য করে তোলার জন্য তাঁরা সব ধরনের সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক করতে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমাদের শিশুরা মেধাবী হওয়ায় বৈশ্বিক শিক্ষার একই গতি বজায় রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগে দেশে ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে তাঁরা তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে চান।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিতে, দেশপ্রেমিক হতে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করতে বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার শেষনিশ্বাস পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ চালিয়ে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী ১০ জন অসচ্ছল মেধাবী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তি তুলে দেন। মোট ১২ হাজার ৩৯৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ২৮৫ জন অসচ্ছল মেধাবী ও ১ হাজার ১০৯ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী প্রায় ৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার বৃত্তি পেয়েছেন।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইসিটি মাস্টারপ্ল্যানসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচন ও তালিকায় স্বাক্ষর করেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষদের পক্ষে কুমিল্লার সেলিম সোনার বাংলা কলেজের আবু সালেক মোহাম্মদ সৌরভ ও রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা বক্তব্য দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এই দিনে (২০০৭ সালের ১৬ জুলাই) বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। তিনি বলেন, ‘জরুরি অবস্থার সময় এই দিনে আমাকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়।’ তিনি বলেন, আমিন নামের এক সামরিক কর্মকর্তা তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যিনি তখনকার সবচেয়ে ক্ষমতাধর ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তখন তিনি সেনাবাহিনীকে বলেছিলেন, তিনি মর্যাদা চান না, নির্বাচন চান, যার মাধ্যমে দেশবাসী তাঁদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন।

কারাগারে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা সেনাসদস্যকে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমার বাবা দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমিও প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। আমার সম্পদ বা বাড়ি-গাড়ির কোনো লোভ নেই। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই। আমি আমার ভাগ্য গড়তে নয়, দেশবাসীর ভাগ্য গড়তেই দেশে ফিরে এসেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতায় দেশ অনেক এগিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসের রাজত্ব দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষার পথ থেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন।