ইন্টারনেটে বাংলার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে: মোস্তাফা জব্বার

সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা দিবস উপলক্ষে বিটিআরসি দুই দিনব্যপী সাইবার জগতে বাংলা ভাষার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছে
ছবি: সংগৃহীত

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সঠিক সময়ে যথাযথভাবে ইউনিকোডকে বোঝাতে সক্ষম না হওয়ায় এখনো ইন্টারনেটে বাংলার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। সোমবার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা দিবস উপলক্ষে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইউনিভার্সেল একসেপ্টেন্স স্টিয়ারিং গ্রুপ এবং ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারসের সহযোগিতায় ২৮ মার্চ  সারা বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হতে যাচ্ছে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা দিবস। এ উপলক্ষে সাইবার জগতে বাংলা ভাষার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ) ২৭ ও ২৮ মার্চ দুই দিনব্যাপী কর্মশালা আয়োজন করেছে।

সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা হচ্ছে ডোমেইন নেইম, ই-মেইল ঠিকানা, ইন্টারনেট সক্ষম যেকোনো অ্যাপ্লিকেশনস এবং সিস্টেমে স্থানীয় ভাষায় আধেয়, ভাষা এবং বর্ণকে  যুক্ত, বৈধতাকরণ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের সক্ষমতাকে বোঝায়।

কর্মশালার প্রথম দিনে অংশ নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, যেই চারটি বর্ণের জন্য ইউনিকোডের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে, সে চারটি অক্ষরের জন্য ইউনিকোডে ভারতীয় বিকল্প শব্দ থাকায় নুকতা ব্যবহার করে লিখতে হয়।  বাংলা, দেবনাগরী লিপি ও ভারতীয় বাংলা একই গোত্রের ভাষা হওয়ায় বর্ণের মধ্যে মিল পাওয়া যায়। ইউনিকোডের কাছে যথাযথভাবে চারটি বর্ণের জটিলতা নিয়ে অগ্রসর হলে তা দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের চেয়ারপারসন হাসানুল হক ইনু বলেন, চীনা, রুশ, আরবিসহ বিশ্বের অনেক ভাষায় ডোমেইন ও ই–মেইল ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে তা পুরোপুরি চালু হয়নি। ইউনিকোডে চারটি বর্ণের জটিলতার কারণে বাংলায় ডোমেইন, ই–মেইলসহ অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে ডিজিটাল সাক্ষরতা, ই-সিটিজেন, বাংলায় কনটেন্ট ব্যাংক ও চারটি বাংলা বর্ণের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

প্রথম দিনের কর্মশালার আলোচনায় নিরাপদ এবং সবার জন্য সাশ্রয়ী ডিজিটাল সংযুক্তি, ইন্টারনেট ব্যবহারে বৈষম্য কমানোসহ জবাবদিহির মানদণ্ড প্রবর্তন করে একটি বিশ্বস্ত ইন্টারনেট–সেবা নিশ্চতের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এ ছাড়া কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিএফের মহাসচিব  মো. আবদুল হক অনু।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবীর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রনজিত কুমার এবং ভিডিও বার্তায় যুক্ত হন ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারসের গ্লোবাল ডোমেইন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি–বিষয়ক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট থেরেসা স্যুইনহার্টসহ প্রমুখ।