চট্টগ্রামে হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহরের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের গাড়িবহরে থাকা একটি গাড়িতে ট্রাক ধাক্কা দিয়েছে। এতে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলা অংশের চুনতি হাজী রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাসনাত ও সারজিস চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি চুনতি ফারাঙ্গা এলাকা থেকে ফিরছিলেন। তাঁদের গাড়িবহরে ১২টি মোটরসাইকেল, দুটি কার ও একটি পাজেরো গাড়ি ছিল। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি হাজী রাস্তার মাথা। ওই এলাকায় বহরের গাড়িগুলো গ্রামীণ সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠছিল। প্রথমে ১২টি মোটরসাইকেল ও পাজেরো গাড়িটি মহাসড়কে ওঠে। ওই পাজেরো গাড়িতে হাসনাত-সারজিস ছিলেন। পরে একটি প্রাইভেট কার মহাসড়কে উঠতেই চট্টগ্রামমুখী একটি মালবাহী ট্রাক গাড়িটির সামনের অংশে ধাক্কা দেয়। এতে কারটির সামনের বাঁ দিকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেট কারটিতে হাসনাত-সারজিসের কয়েকজন সফরসঙ্গী ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে যেতে চাইলে বহরে থাকা মোটরসাইকেল আরোহীরা ধাওয়া দিয়ে চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেন। পরে তাঁদের লোহাগাড়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে হাসনাত-সারজিস লোহাগাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সহকর্মীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। ট্রাকের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িতে চট্টগ্রামের সমন্বয়কেরা ছিলেন বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা জানিয়েছেন।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ লিখেছেন, ‘নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে চালক ময়মনসিংহ থেকে কক্সবাজারে মালামাল খালাস করে আসার কথা বললেও মালামাল খালাসের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অতীতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কর্তৃক বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনেক ব্যক্তিকে হত্যা করার নজির রয়েছে।’
লোহাগাড়া থানায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ট্রাকের চালক ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বাসিন্দা মজিবুর রহমান (৪০) ও তাঁর ছেলে রিফাত মিয়াকে (১৮) পুলিশ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও প্রাইভেট কার থানা হেফাজতে রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে।
এর আগে লোহাগাড়ায় দুই দফা জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের মরদেহ উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারাঙ্গা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম সাইফুলের গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় তাঁরা সাইফুলের কবর জিয়ারত করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে করে সান্ত্বনা দেন।