শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে যেতে এক পরিবারের পথে পথে ভোগান্তি

ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনিতা মোহন্তের পরিবার। আজ রংপুরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায়
ছবি: মঈনুল ইসলাম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা অনীল মোহন্ত। তিনি তাঁর পরিবারের সাতজন সদস্য নিয়ে যাবেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর এলাকার মিশন এলাকায়। তাঁর এক নিকটাত্মীয় কয়েক দিন আগে পরলোকগমন করেছেন। তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে বাস না থাকায় দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়েছেন তাঁরা।

অনেক কষ্ট করে হলেও অটোতে করে রংপুরে এসেছেন তাঁরা। সেখান থেকে যেভাবেই হোক পার্বতীপুর তাঁদের যেতে হবে, এতে পথে যত দুর্ভোগই হোক। এমন কথা জানালেন এই পরিবারের সদস্যরা।

রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রংপুর জেলা বাস মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটে এমন দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরা।

দুর্ভোগে পড়া অনীল মোহন্তর পরিবারটি সুন্দরগঞ্জ থেকে ৫০০ টাকার ভাড়ার বিনিময়ে একটি ব্যাটরিচালিত অটোরিকশায় করে রংপুর পর্যন্ত আসেন। অটো থেকে নামার পর আবার তাঁদের অটো ভাড়া করতে হবে। এমন এক মুহূর্তে আজ সকাল ১০টার দিকে কথা হলো অনীল মোহন্ত, অনীতা মোহন্ত ও সুমি মোহন্তর সঙ্গে। অনীল মোহন্ত বলেন, ‘আমরা জানতাম না যে বাস বন্ধ। আর আমাদের যেতে হবে আত্মীয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে। উপায় না পেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে অটোতেই যাচ্ছি।’

অনীলের সঙ্গে থাকা ছোট ভাইয়ের স্ত্রী অনীতা মোহন্তর হাতে একটি এলপি গ্যাস। অভাবের সংসার হওয়ায় সেখানে গ্যাস দিয়ে রান্নার কাজও করবেন বলে জানালের অনীতা। সঙ্গে দুটি শিশুসন্তান। এক শিশুসন্তানের কোলে আরেক শিশু। বাস না থাকায় তাঁদের সবার কষ্ট হচ্ছে। এমন এক অবস্থায় অনীতা বলেন, ‘কী আর করব। যেতে যে হবেই। অটোতে চড়ে টাকাও বেশি লাগছে, কষ্টও অনেক। বাচ্চাদের বেশি কষ্ট হয়েছে। কিন্তু উপায় নেই। আমাদের সেখানে যেতে হবে।’

এই পরিবারের সুমি মোহন্ত নামের আরেক নারী বলেন, ‘সকাল আটটায় সুন্দরগঞ্জ থেকে অটো ভাড়া করে রংপুরে এসেছি। এরপর এখান থেকে অটোতে চড়েই পার্বতীপুর যেতে হবে। আমরা জানতাম না যে বাস বন্ধ। এটি আগে জানলে কালকেই (বৃহস্পতিবার) চলে যেতে যেতাম।’

ধর্মঘটের কথা না জেনে রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসে বাস বন্ধ পাওয়ায় অনেককে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ জরুরি প্রয়োজনে অটোতে চেপেই গন্তব্যে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।