বসে বসে বেতন নিচ্ছেন ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী 

২০২০ সালে সর্বশেষ ২৫টি পাটকল বন্ধের পর আর কোনো কারখানা চালাচ্ছে না বিজেএমসি। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ভাড়া দিয়ে চারটি কারখানা চালু রেখেছে।

রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার মোড় থেকে সুলতানা কামাল সেতুর দিকে যাওয়ার পথে লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস লিমিটেডের প্রধান ফটক। ভেতরে ঢুকে একটু এগোলে ডান পাশে পাটকল কারখানা। আর বাঁ পাশে পুকুর। পুকুরপাড়ে হোটেল, সেলুনসহ বেশ কয়েকটি দোকান। দু–একজন করে দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।

গাছাগাছালি ঘেরা কারখানা এলাকায় আর তেমন মানুষ দেখা গেল না। সম্প্রতি একদিন দুপুরে গিয়ে এমন সুনসান দেখা গেল বাওয়ানী পাটকল এলাকায়।

প্রায় আড়াই বছর আগে এই পাটকল যখন চালু ছিল, তখন চিত্র ছিল পুরো ভিন্ন। এলাকাটি ছিল অনেকটা বাজারের মতো। ছিল দোকানপাট, বহু মানুষের আনাগোনা। শ্রমিক ছাঁটাই করে কারখানা বন্ধের পর এই জায়গা এখন সুনসান। সেখানে এখনো সেলুন চালান নরসুন্দর কমল চন্দ্র শীল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন আয় খুব কম। চলা কষ্ট হয়ে গেছে।

২০২০ সালের ১ জুলাই প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করে লতিফ বাওয়ানী বন্ধ করে দেওয়া হলেও এখনো ৭৫ কর্মকর্তা ও ৯৭ কর্মচারী আছেন। তাঁরা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন।

একই দিন লতিফ বাওয়ানীর মতো বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয়। এতে ৫০ হাজারের বেশি শ্রমিক চাকরি হারান। সব কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও ২ হাজার ৯৪১ কর্মকর্তা–কর্মচারী ছিলেন। এখনো আছেন ২ হাজার ৫১৭ কর্মকর্তা–কর্মচারী।

আড়াই হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারীর মধ্যে রাজধানীর মতিঝিলে বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়ে ১৫৪ কর্মকর্তা ও ১১০ কর্মচারী আছেন। সম্প্রতি তিন দিন প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেক কর্মকর্তা–কর্মচারীর চেয়ার ফাঁকা। দুই দিন গিয়ে ব্যবস্থাপক পর্যায়ের এক কর্মকর্তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। তৃতীয় দিন দুই ঘণ্টার বেশি অপেক্ষার পর তাঁকে পাওয়া যায়।

কারখানা বন্ধ থাকলেও বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়ের উৎপাদন বিভাগে আছেন ১০ কর্মকর্তা। বিভাগের তিন কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে টেবিল ফাঁকা দেখা যায়। একই কক্ষে দুই কর্মকর্তা গল্প করছিলেন। তাঁদের কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো জবাব দেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আপাতত কাজ নেই। করপোরেশন যখন যে কাজ দেয়, তা–ই তাঁরা করেন।

জানা যায়, বিজেএমসির প্রধান ও আঞ্চলিক কার্যালয়, পাটকল ও তিনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে যোগ্য ও দক্ষদের চাকরি স্থানান্তর বা পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুপারিশ করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আন্তমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স গঠন করে দেয়। 

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, বিজেএমসির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আত্তীকরণের চিন্তাভাবনা আছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। 

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পাট) তসলিমা কানিজ বলেন, আত্তীকরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি আইন হচ্ছে। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অস্থির কর্তৃপক্ষ

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ৭৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের সমন্বয়ে বিজেএমসি গঠন করা হয়। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে বিজেএমসি আরও ৪টি পাটকল করলে সংখ্যা দাঁড়ায় ৮২। তবে পরের বছর ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বেসরকারীকরণ নীতিমালার আওতায় ৩৫টি পাটকল সাবেক বাংলাদেশি মালিকদের কাছে শর্তসাপেক্ষে হস্তান্তর, আটটির পুঁজি প্রত্যাহার এবং সাতটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। তখনো বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণে ছিল ৩২টি পাটকল।

২০০২ সালে সরকার বিজেএমসির আদমজী জুট মিলস লিমিটেড ও এবিসি লিমিটেড বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) কাছে হস্তান্তর করে। পরে শর্তভঙ্গের কারণে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মালিকানায় দেওয়া পাটকলগুলোর মধ্যে ছয়টি পুনঃ গ্রহণ করে বিজেএমসিকে দেয় মন্ত্রণালয়। দুই বছর পর ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। এখন মন্ত্রণালয় কর্মসংস্থানের কথা বলে এগুলো ভাড়া দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

গত বছরের মাঝামাঝি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জুটো–ফাইবার গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানাটি বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে মন্ত্রণালয়। এখন বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণে আছে ৩৫টি পাটকল।

তবু লোকসানে

কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরও লোকসান দিচ্ছে বিজেএমসি। গত অর্থবছরে বিজেএমসির লোকসান ২৬০ কোটি টাকার বেশি। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন, সম্পত্তি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি–বিদ্যৎ, অপচয় ইত্যাদি খাতে এই লোকসান হয়েছে। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন বাবদ সবচেয়ে বেশি ১৪০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। ২০২০–২১ অর্থবছরে বিজেএমসি লোকসান হয়েছিল প্রায় ৩৭৩ কোটি টাকা। 

বেকার শ্রমিকদের অবস্থা

চাকরি হারানো শ্রমিকেরা এখন কেমন আছেন? খোঁজ নিতে গিয়ে কথা হয় খুলনার খালিশপুরের স্টার পাটকলের শ্রমিক মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। চাকরি গেলে তিনি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ ও কিছু সঞ্চয়পত্র পান। প্রায় ২০ মাস বেকার ছিলেন। এরপর ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসান দেন। প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সঞ্চয়পত্রের টাকা হারান। এখন তিনি খুলনা শহরে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন।

আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করে মাসে ৭ হাজার টাকা বেতন পাই। পাটকলে পেতাম প্রায় ২০ হাজার টাকা। এখন সংসার চালানো দায়।’ 

অর্থসংকটে আলমগীরের চতুর্থ শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে স্কুল ছেড়েছে। তাঁর সন্তানসম্ভবা মেয়ে স্বামীসহ তাঁর বাড়িতে উঠেছেন। মেয়ের বিয়ের সময় ধার নেওয়া ২৬ হাজার টাকা পরিশোধের সময় হয়েছে।

আলমগীর বলেন, ‘চারপাশে অনেক বিপদ। আত্মহত্যা মানুষ কি আর খালি খালি করে? মিল বন্ধ হওয়ায় শুধু আমার না, বাচ্চাদেরও জীবন নষ্ট হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, তাঁর একসময়ের অনেক সহকর্মীর অবস্থা এখন তাঁর মতো।

অ–পাট ব্যবসায়ীদের হাতে পাটকল

বিজেএমসি এখন বন্ধ পাটকল ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ১৭টি (মূলত ২১টি। নরসিংদীতে তিনটি কারখানা মিলে ইউএমসি জুট মিলস লিমিটেড এবং চট্টগ্রামে তিনটি মিলে কেএফডি নামে পরিচিত) ভাড়ার অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বরে অনুমোদন দেয় আরও দুটি কারখানা। এখন পর্যন্ত বিজেএমসি মাত্র ছয়টি (মূলত আটটি) পাটকল ভাড়া দিয়েছে। ভাড়া ছয় পাটকলের মধ্যে চারটি চালু করা হয়েছে। 

তবে যাদের কাছে এসব পাটকল ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তাদের কেউই পাট ব্যবসায় সম্পৃক্ত নয়। যেমন রশিদ অটোমেটিক রাইস মিলস ভাড়া নিয়েছে সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিল, স্টিল মার্ক বিল্ডিংস নিয়েছে চট্টগ্রামের এম এম জুট মিলস, ফরচুন শুজ লিমিটেড নিয়েছে খুলনার প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস, ইউনাইটেড কম্পোজিট মিলস নিয়েছে চট্টগ্রামের কে এফ ডি জুট মিলস, বে ফুটওয়্যার নিয়েছে নরসিংদীর বাংলাদেশ জুট মিলস এবং ইন্টারস্টোফ লিমিটেড নিয়েছে চট্টগ্রামের আর আর জুট মিলস।

বিজেএমসির শর্ত অনুযায়ী, এসব পাটকল ভাড়া নিয়ে পাট ও টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদন করা যাবে। এসব পাটকল সর্বোচ্চ ৩০ বছরের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। মাসে সর্বনিম্ন ২২ লাখ ৫০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৪২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় কারখানা ভাড়া দিয়েছে বিজেএমসি। 

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩৮ একরের এই পাটকলে শুধু কারখানা ভাড়া নিয়ে আলিয়া জুট মিলস লিমিটেড নামে আংশিক উৎপাদন শুরু করেছে রশিদ রাইস মিলস। তারা পাটের বস্তা বানাচ্ছে। কারখানার বাইরের অংশ বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণে। 

বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজেএমসির কারখানা বেসরকারি পাটকলমালিকেরা নিচ্ছেন না। কারণ, সরকারের সহযোগিতার অভাবে বেসরকারি পাটকলমালিকেরা আন্তর্জাতিক বাজারে টিকতে পারছেন না। যন্ত্রপাতিও পুরোনো। সেগুলো আধুনিকায়নে অনেক খরচ করতে হবে। আমরা সরকারকে একটি তহবিল গঠনের অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সরকার সাড়া দেয়নি।’ 

পড়ে আছে ২৭ পাটকল

এখনো ২৭টি পাটকল অলস পড়ে আছে। কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বলছেন, এতে যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি লতিফ বাওয়ানীতে গিয়ে দেখা যায়, ভবনগুলোতে ময়লার স্তূপ, গাছ–লতাপাতায় ছেয়ে আছে। কর্মচারীরা বলেন, এভাবে যন্ত্রপাতি সচল রাখা কঠিন। কারখানার ভেতরে গাছ গজিয়ে যায়।

খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের তুলনায় ঢাকা অঞ্চলে কম পাটকল ভাড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় সরকার কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে জমির সংকট দেখা দেয়। 

শর্ত ভঙ্গের কারণে মালিকদের থেকে ফেরত নেওয়া ছয়টি পাটকলও বন্ধ। এর একটি হচ্ছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগের ঢাকা জুট মিলস লিমিটেড। সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ২৪ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই পাটকল এখন জঙ্গল। বিজেএমসির কর্মকর্তারা বলেন, এই পাটকলের অধিকাংশ যন্ত্রপাতি সাবেক মালিক বিক্রি করে দিয়েছেন। আছে কেবল স্থাপনা। 

ভাড়াটে পায় না বিজেএমসি

যানজট নিরসনে মতিঝিল এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করতে বিজেএমসির কাছ থেকে জমি নেয় ঢাকা সিটি করপোরেশন। ২০০৫ সালে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেখানে সানমুন টাওয়ার নামে ভবন নির্মাণ করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ পাঁচটির ফ্লোরের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে ঠিকাদার যেসব ফ্লোর পাবে, সেগুলোর কাজ শেষ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে সিটি করপোরেশনের একটি সাইনবোর্ড ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি।

২২তলা ভবনের মাত্র দুটি ফ্লোর ও ৩০টি গাড়ি পার্কিং স্পেস দেওয়া হয়েছে বিজেএমসিকে। দুটি ফ্লোরের কাজ শেষ হলেও ভাড়া দিতে পারছে না তারা। বিজেএমসির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তাঁরা বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, কিন্তু ভাড়া মিলছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতাও এ জন্য দায়ী।

সম্পত্তি রক্ষাই চ্যালেঞ্জ

বিজেএমসির মোট জমির পরিমাণ ১ হাজার ৫১৭ একর। কর্মকর্তারা বলছেন, বিজেএমসির সম্পদ রক্ষা করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।  

সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বিজেএমসিতে প্রশাসনিক ও জমিজমাসংক্রান্ত মোট ৮৯২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জমিজমাসংক্রান্ত ১৩৬টি। গত এক বছরে বিজেএমসি জমিজমাসংক্রান্ত পাঁচটি মামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে হয়েছে ১০টি মামলা। 

কর্মকর্তারা বলেন, বেদখল জমি উদ্ধারে মামলা করা হয়েছে। 

বিজেএমসির ভবিষ্যৎ

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়েরই আরেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাট করপোরেশন (বিজেসি) ১৯৯৩ সালে বিলুপ্ত করা হয়। কিন্তু তিন দশক হতে চললেও বিলুপ্তির কাজ শেষ হয়নি। এখনো বিজেসিতে বেশ কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারী আছেন। প্রতিষ্ঠানটির ২৯৫ একর জমির ১৯০ একরই বেদখল।

বিজেএমসিও কী বিজেসির পথে হাঁটছে—এমন প্রশ্নের জবাবে পাটসচিব আবদুর রউফ বলেন, ‘নাহ, বিজেএমসি নিয়ে পরিকল্পনা অনেক বড়।’

পাটশিল্প নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে বড় ধরনের স্ববিরোধিতা রয়েছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাটকলগুলো বন্ধ, কিন্তু মাথাভারী প্রশাসন বেতন নিচ্ছে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, পৃথিবীতে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের বড় ধরনের সম্ভাবনা পাট দিয়ে তৈরি হয়েছিল। সরকারের উচিত ছিল, পাটজাত পণ্য আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করা। নতুন প্রযুক্তি আনা, পাট কেনা, আমলাদের দুর্নীতি বন্ধসহ যেসব সমস্যা ছিল, তা সমাধান করা। সেটা না করে সরকার পাটকলগুলো বন্ধ করে দিল। পাটকল বন্ধের পেছনে কিছু গোষ্ঠী রয়েছে। নতুন শিল্পকারখানার নামে তারা বিশাল এই জমি দখলে নিতে চায়।


[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ ]