পাওনা টাকা চাওয়ায় ফারুককে হত্যা, উপড়ানো হয় চোখ: র‍্যাব

গ্রেপ্তার পাঁচজন। বাঁ থেকে সোহাগ, নিজাম, বাদশা, রনি ও জহিরুলছবি: র‍্যাবের সৌজন্যে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ের পাশ থেকে ফারুক হোসেন (২৬) নামের এক তরুণের চোখ উপড়ানো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাব জানতে পেরেছে, পাওনা টাকা চাওয়ার বিরোধ থেকে ফারুককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিজাম উদ্দিন (৩৬) এবং তাঁর চার সহযোগী মো. সোহাগ (৩৮), জহিরুল ইসলাম (৪৮), রনি হোসেন (২৩) ও মো. বাদশা (২৩)।

র‌্যাবের ভাষ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুরের টঙ্গী এবং লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে নিজাম ফারুকের পূর্বপরিচিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রঘুরামপুর এলাকার এশিয়ান হাইওয়ের পাশ থেকে ফারুকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা করে ফারুকের পরিবার। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নিজাম ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাউন্টার ম্যানেজার, আর ফারুক কাউন্টারম্যান। তাঁদের দুজনের কর্মস্থল টঙ্গী এলাকায়। নিজামের কাছে ফারুক টাকা পেতেন। ফারুক পাওনা টাকা চাইলে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এই বিরোধের জের ধরে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নিজাম।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে ফারুককে কাউন্টারে ডেকে আনেন নিজাম। এরপর নিজাম ও তাঁর চার সহযোগী ফারুককে মারধর করেন। মারধরের পর ফারুককে ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি খালি বাসে উঠিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আবারও এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে সোহাগ ও রনি ফারুকের হাত-পা চেপে ধরেন। বাদশা ফারুকের বাঁ চোখ উপড়ে ফেলেন। পরে ফারুকের মৃতদেহ বাসে করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ের পাশে রঘুরামপুর এলাকার নির্জন স্থানে ফেলা হয়।

র‌্যাব জানায়, নিজাম উদ্দিন ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনে সাত বছর ধরে কাউন্টার ম্যানেজার হিসেবে গাজীপুরের টঙ্গী চেরাগ আলী বাসস্ট্যান্ডে চাকরি করেন। তাঁর সহযোগী বাদশা গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি গ্রিল ওয়ার্কশপের কর্মী। রনি ঢাকা এক্সপ্রেস ও লাবিবা ক্ল্যাসিক পরিবহনের টঙ্গী স্টেশনের কাউন্টারের মালিক। সোহাগ ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনে ১৭ বছর ধরে সুপারভাইজার হিসেবে চাকরি করছিলেন। জহিরুল ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের একজন চালক।