নির্বাচন করতে হলে অবসরের পর অপেক্ষা ৩ বছরই থাকছে

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিধানের বৈধতা প্রশ্নে রুল খারিজ (ডিসচার্জ) করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।

রায়ের ফলে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানটি বৈধ ও বহাল রইল বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর না পেরোলে কেউ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।  

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১) (চ) ধারা অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের কোনো চাকরি থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণের তিন বছর পার না হলে কেউ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এই বিধান চ্যালেঞ্জ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল চলতি বছর হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ওই বিধান কেন সংবিধান পরিপন্থী নয়, তা জানতে চাওয়া হয়। একই বিষয় নিয়ে চলতি বছর করা পৃথক তিনটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে রুল হয়। পৃথক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া রুলের ওপর গত ৭ নভেম্বর একসঙ্গে শুনানি শুরু হয়। গত ২৯ নভেম্বর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, তানিয়া আমীর ও মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

চারটি রিটের মধ্যে একটি রিট করেছিলেন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আতাউর রহমান প্রধান। তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর আপিল করা হবে।

রায়ের পর্যবেক্ষণ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের সামরিক ও বেসমারিক কর্মকর্তা–কর্মচারী সাধারণ নাগরিকের মতো নন। তাঁরা নির্বাচনী ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার করার মতো ক্ষমতা রাখেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ওই বিধানটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। সংবিধান ৬৬(২)(ছ) অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদ আইন প্রনয়নের মাধ্যমে অযোগ্যতা আরোপ করতে পারে। এর আলোকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ওই বিধানটি। তাই বিধানটি দিয়ে মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়নি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া মৌলিক অধিকার নয়, এটি সংবিধিবদ্ধ অধিকার বলে রায়ে এসেছে।’