ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
আজ বুধবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন মামলা অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সদ্য নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেডের নামে বন্ড ইস্যু করে এবং আইএফআইসি আমার বন্ড-এর নাম ব্যবহার করে প্রচার চালিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করা হয়। এভাবে ১ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। এই বন্ডের নিরাপত্তা হিসেবে যে জমিটি দেখানো হয়, তার প্রকৃত মূল্য ৮৭ কোটি টাকা হলেও তা ১ হাজার ২০ কোটি টাকা হিসেবে দেখানো হয়। উত্তোলিত অর্থের মধ্যে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ) করে বিনিয়োগকারীদের মাসিক সুদ প্রদান করা হতো। বাকি ৮০০ কোটি টাকা বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে নানা ধরনের সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে নগদ উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউজ্জামান, পরিচালক তিলাত শাহরিন, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহ আলম সারোয়ার, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, এ আর এম নাজমুস সাকিব, কামরুন নাহার আহমেদ, সাবেক পরিচালক রাবেয়া জামালী, গোলাম মোস্তফা, মো. জাফর ইকবাল, বিএসইসির সাবেক কমিশনার রুমানা ইসলাম, মিজানুর রহমান, শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, মো. আবদুল হালিম, আইএফআইসি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ক্রেডিট অফিসার সৈয়দ মনসুর মোস্তফা, হেড অব লোন পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্ট শাহ মো. মঈনউদ্দিন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার (রিটেইল) মো. রফিকুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার (করপোরেট) গীতাঙ্ক দেবদীপ দত্ত, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ অব আইটি মো. নুরুল হাসনাত, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ইনফরমেশন অফিসার মনিতুর রহমান, হেড অব ট্রেজারি মোহাম্মদ শাহিন উদ্দিন, ধানমন্ডি শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও এফভিপি নাজিমুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপক হোসাইন শাহ আলী, রিলেশনশিপস ম্যানেজার সরদার মো. মমিনুল ইসলাম, সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিমাই কুমার সাহা, কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা ও সিলভিয়া চৌধুরী।
দুদক বলছে, অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ না করেই প্রস্তাবিত মর্টগেজ সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন বা মূল্য যাচাই না করেই ৮৭ কোটি টাকা মূল্যের জমিকে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা মূল্য দেখানো হয়।