জাপানি শিল্পী সেইজি শিমোদার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ চট্টগ্রামের দর্শক
মুখে লাল রং মাখা, এক হাতে মুঠোফোন। নাচের মুদ্রায়, পাখির ভঙ্গিতে নানা ভাব ফুটিয়ে তুলছিলেন শিল্পী। মেঝেতে বসা জনা পঞ্চাশ দর্শক তন্ময় হয়ে দেখছিলেন তা। এমন পারফরম্যান্সের প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের দর্শকদের মন জয় করলেন জাপানি শিল্পী সেইজি শিমোদা। আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় চট্টগ্রামের খুলশীতে অবস্থিত চিত্রভাষা গ্যালারিতে পোড়াপাড়া স্পেস ফর আর্টিস্ট ও চিত্রভাষার উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
১৯৭৭ সালে জাপানের ওসাকা সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পাস করা শিমোদা এ পর্যন্ত ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার ৩০টির মতো দেশে পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। সেইজি শিমোদা জাপানের শিল্প-সংস্কৃতি মহলে অত্যন্ত সক্রিয় ও সম্মানিত শিল্পী। তিনি টোকিওর মুসাশিনো আর্ট ইউনিভার্সিটিতে পারফর্মার, কবি, কিউরেটর ও প্রভাষক হিসেবে কাজ করছেন। এ ছাড়া নিপ্পন ইন্টারন্যাশনাল পারফরম্যান্স আর্ট ফেস্টিভ্যালের (এনআইপিএএফ) পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন সেজি শিমোদা।
চট্টগ্রামে প্রদর্শিত শিমোদার পারফরম্যান্সের শিরোনাম ছিল ‘রেড ফেস কিডস’। দেহভঙ্গি, অভিনয়, বডি পেইন্টের ব্যবহার নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে এই পারফরম্যান্সে। নিজের পারফরম্যান্স সম্পর্কে শিমোদা বলেন, তিনি যৌবনে একসময় সাম্যবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ বদলের সেই স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ে। তাঁর মুখের লাল রং সমাজবাদী চেতনারই প্রকাশ। স্বপ্নভঙ্গের বেদনার রূপায়ণ করেছেন তিনি পারফরম্যান্সে।
সেইজি শিমোদার পারফরম্যান্সে প্রদর্শনীর পর ছিল শিল্পীর সঙ্গে দর্শকের কথোপকথন। পাশাপাশি ছিল গান ও কথামালার আয়োজন।
কথামালায় স্বাগত বক্তব্য দেন পোড়াপাড়া স্পেস ফর আর্টিস্টের সভাপতি আবু নাসের রবি। তিনি বলেন, এ দেশে পারফরম্যান্স আর্টের প্রসারে শিমোদা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ২০০৯ সালে তিনি চট্টগ্রামে একটি পারফরম্যান্স আর্টের কর্মশালা পরিচালনা করেন। সেই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা বর্তমানে বাংলাদেশে পারফরম্যান্স আর্টের জগতে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
আয়োজন সম্পর্কে চিত্রভাষা গ্যালারির পরিচালক মইনুল আলম বলেন, চিত্রভাষা গ্যালারি তার জন্মলগ্ন থেকেই ভিন্নধর্মী আয়োজন করতে সচেষ্ট। তারই ধারাবাহিকতায় সেইজি শিমোদার এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে চিত্রভাষা গ্যালারির সংগঠক মাহমুদ আলম সৈকত এবং কবি ও আলোকচিত্রশিল্পী আসমা বীথি উপস্থিত ছিলেন।