ইডেনের ১৪ নেতা-কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগ

ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রমের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এবার কলেজ কমিটির স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত ১৬ নেতা-কর্মীর মধ্যে ১৪ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

এতে বলা হয়েছে, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইডেন কলেজের ওই ১৪ নেতা-কর্মীর বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ে, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা ও সূচনা আক্তার। তবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি এক সময় সহসভাপতির পদে থাকা জান্নাতুল ফেরদৌস ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তারের।

এর আগে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার কিছু অনুসারীরা জান্নাতুল ফেরদৌসকে হেনস্তা ও মারধর করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে গত ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত ও পরদিন দিনব্যাপী উত্তপ্ত ছিল ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষ ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের দুজনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁদের বহিষ্কার দাবি করে। একই দিন সন্ধ্যার আগে কলেজ মিলনায়তনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

সংঘর্ষে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিনসহ দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তামান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে কলেজ প্রশাসন ও পুলিশের মাধ্যমে লেগুনায় করে ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসছাড়া হওয়ার খুশিতে তাঁদের বিরোধী পক্ষের নেত্রীরা ক্যাম্পাসে আনন্দমিছিল করেন। ওই অস্থিরতা চলাকালে বিরোধীপক্ষে থাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) সামিয়া আক্তার গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, ইডেন কলেজে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন। এ নিয়ে তখন ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।

এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত একটার দিকে ইডেন কলেজ শাখা কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরোধীপক্ষের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। গত ৯ নভেম্বর রাতে ইডেন শাখা কমিটির ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বুধবার বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১৪ জনের বহিষ্কারাদেশও তুলে নেওয়া হলো।

আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই হিসাবে আল নাহিয়ান ও লেখক আর সপ্তাহ দুয়েক ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। নিজেদের শেষ সময়ে তাঁরা আগে স্থগিত করা কমিটি বা বহিষ্কার করা নেতা-কর্মীদের দায়মুক্তি দিচ্ছেন। নানা অভিযোগে স্থগিত করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির স্থগিতাদেশও গত ৯ নভেম্বর তুলে নিয়েছেন আল নাহিয়ান ও লেখক।