নামের মিলে অন্যের সাজা ছয় মাস খেটে মুক্তি পেলেন জাসেদুল

ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনার সময় মালয়েশিয়ায় ছিলেন জাসেদুল, দেশে ফিরলে তাঁকে ঢুকতে হয় কারাগারে
ছবি: সংগৃহীত

ইয়াবা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি না হয়েও ছয় মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর নাম জাসেদুল আলম (৪৩)। তিনি কক্সবাজার জেলার রামু থানার রাজাকুল সিকদার পাড়ার ওবায়দুল হকের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান জাসেদুল। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রামু থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালত এ মামলায় জাসেদুল আলম নামের এক আসামিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। নামের মিল থাকায় এই জাসেদুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন

অপরদিকে প্রকৃত আসামি জাসেদুল জামিনে গিয়ে পলাতক। ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের পর তিনি পুলিশকে নিজের নাম–ঠিকানা গোপন রেখে নিজেকে কক্সবাজারের জাসেদুল পরিচয় দেন। আর তদন্তে নাম–ঠিকানা সঠিকভাবে যাচাই না হওয়ায় প্রকৃত আসামি আড়ালে থেকে যান।

২০১১ সালের ২ মার্চ নগরের পাহাড়তলী থেকে ১৫০ ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম। পরে এ ব্যক্তি নিজের সঠিক পরিচয় গোপন করে জাসেদুলের নাম-ঠিকানা দেন। তদন্ত কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের তৎকালীন পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। সাজা খাটা জাসেদুল ঘটনার সময় ছিলেন মালয়েশিয়ায়। আর ২০১১ সালের ৩ মে জামিনে মুক্তি পান গ্রেপ্তার জাসেদুল। পরের বছরের ১৭ জানুয়ারি থেকে তিনি পলাতক।

আরও পড়ুন

অন্যের সাজা ভোগ করতে থাকা জাসেদুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে গত জুন মাসে আদালতে আবেদন করেন। আদালত চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চান। এতে বলা হয়, ২০১১ সালে আসা আসামি জাসেদুল আর এ বছর আসা জাসেদুলের চেহারার মিল নেই।

চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ প্রথম আলোকে বলেন, জাসেদুলের মুক্তির বিষয়ে গত জুলাই মাসে হাইকোর্টকে জানানো হয়। সেখানে থেকে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া আদেশটি দুপুরে আদালতে আসে। পরে সেটি কারাগারে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের আদেশটি যাচাই–বাছাই করে জাসেদুলকে সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

মুক্তি পাওয়ার পর জাসেদুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি মালয়েশিয়ায় ছিলাম। আসামি না হয়েও ছয় মাস কারাভোগ করতে হয়েছে। জীবন থেকে হারানো ছয়টি মাস কে ফিরিয়ে দেবে?’