যৌতুকের কারণে মৃত্যু হলে একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান প্রশ্নে রুল
যৌতুকের কারণে কারও মৃত্যু হলে একমাত্র শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’–সংক্রান্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রুল দেন।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারার বৈধতা নিয়ে ইক্যুইটি রাইটস অ্যান্ড গভর্ন্যান্স ট্রাস্ট ওই রিট করে।
আইনের ১১(ক) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যৌতুকের কারণে মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডে বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে ওই দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।
১১(ক) ধারা অনুসারে যৌতুকের জন্য কোনো মৃত্যু ঘটলে এর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। যখন কোনো অপরাধের একটিমাত্র শাস্তি থাকে, অর্থাৎ একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তখন এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী বলে ধরে নেওয়া হয়। কেননা, বিচারক অপরাধী সাব্যস্ত করে কাউকে যাবজ্জীবন দিতে পারেন, আবার মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন।
রুলে ১১(ক) ধারা কেন অবৈধ, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, অসংগতিপূর্ণ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মনজুর আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।
পরে আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ১১(ক) ধারা অনুসারে যৌতুকের জন্য কোনো মৃত্যু ঘটলে এর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। যখন কোনো অপরাধের একটিমাত্র শাস্তি থাকে অর্থাৎ, একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তখন এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী বলে ধরে নেওয়া হয়। কেননা, বিচারক অপরাধী সাব্যস্ত করে কাউকে যাবজ্জীবন দিতে পারেন, আবার মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন। এই ক্ষমতা যদি কেড়ে নেওয়া হয় এবং দোষী হলে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে বলা হয়, এটি অসাংবিধানিক। যে কারণে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন।