গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের ওপর গতকাল শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিপেটার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তি পুলিশের সদস্য বলে দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে রাশেদ খান এই দাবি করেছেন। ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান লিখেছেন ‘লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তি পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর নাম মিজানুর রহমান। বিপি নং-৯৭১৭১৯৭২৪৩। তিনি ছাত্রনেতা সম্রাটের ওপর হামলা করেছেন।’
ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তি যাঁকে পেটাচ্ছেন, তিনি নুরুল হক নুর নন, তিনি ছাত্রনেতা সম্রাট। এই হামলার বৈধতা দেওয়া উচিত নয়।’
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লাল শার্ট পরিহিত সেই ব্যক্তি পুলিশ সদস্য কি না, তা তাঁর জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘লাল শার্ট পরা ব্যক্তির ওপর দায় চাপিয়ে নুরুল হকসহ নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই। সেনাবাহিনীর যাঁরা নুরুল হক নুরের ওপর হামলা করেছেন, তাঁদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এমনকি আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে ও বাথরুম ভেঙে অসংখ্য নেতা–কর্মীদের রক্তাক্ত করেছে সেনাবাহিনী।’
রাজধানীর কাকরাইলে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জাপার কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিপেটায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, গতকাল সন্ধ্যায় মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় জাপার নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। তবে জাপা বলেছে, মিছিল নিয়ে এসে জাপার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, জাপার হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে সভাপতি নুরুল হক, তিনিসহ নেতা-কর্মীরা সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের লাঠিপেটা করেন। এ সময় সভাপতি নুরুল হক, তিনিসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। নুরুল হক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকেসহ ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জননিরাপত্তা রক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর পাঁচজন সদস্য আহত হন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
নুরুল হকের চিকিৎসায় উচ্চপর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, নুরুল হকের মাথায় আঘাত রয়েছে। তাঁর নাকের হাড় ভেঙে গেছে। যে কারণে গতকাল অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। আগেই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে ও জ্ঞান ফিরেছে। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে নুরুল হক আশঙ্কামুক্ত, সেটি বলা সম্ভব নয়।