বিএনপি নেতা হাবিবকে খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

আদালত অবমাননার মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাজির না হওয়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিবকে খুঁজে বের করে অবিলম্বে আদালতে হাজির করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজপি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদেশের জন্য আগামী ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য রেখেছেন আদালত।

উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে ‘অবমাননাকর বক্তব্যের’ প্রেক্ষাপটে গত ১৫ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ হাবিবুর রহমানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। ব্যাখ্যা জানাতে তাঁকে ৬ নভেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ধার্য তারিখে তিনি বা তাঁর পক্ষে কোনো প্রতিনিধি আদালতে হাজির হননি।

এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট পুলিশের সঙ্গে কথা বলে হাবিবুর রহমানের অবস্থান জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৮ নভেম্বর শুনানির দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি ওঠে। আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান শুনানি করেন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হাবিবকে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা পাবনায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাবনায় কোনো মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হননি বা অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পাবনা জেলা কারাগারে আটক নেই বলে ৬ নভেম্বর জানিয়েছেন পাবনার পুলিশ সুপার। হাবিবের বর্তমান ঠিকানা শ্যামলী শেরেবাংলা নগর থানাধীন। ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ৬ নভেম্বর জানিয়েছেন, ওই বাসায় তাঁর স্ত্রীর কাছে আসামির (হাবিব) অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানেন না বলে জানান। এসব তথ্য জানানোর পর হাইকোর্ট হাবিবকে অবিলম্বে খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করতে পুলিশের মহাপরিদর্শকে নির্দেশ দেন। ধার্য তারিখ ৭ ডিসেম্বরের আগে তাঁকে ধরা হলে সঙ্গে সঙ্গে (আদালতের কার্যদিবসে) হাইকোর্টে হাজির করতে হবে।

এর আগে বিচারপতি আখতারুজ্জামান সম্পর্কে হাবিবের দেওয়া বক্তব্য ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ-সংক্রান্ত নথি উত্থাপিত হলে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে পাঠান। সঙ্গে অভিযোগসংক্রান্ত ভিডিও ক্লিপও পাঠানো হয়। গত ১৫ অক্টোবর বিষয়টি হাইকোর্টের উল্লিখিত বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। লিখিত আকারে হাবিবের দেওয়া বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানি নিয়ে সেদিন হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার রুল দেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর তৎকালীন বিচারক আখতারুজ্জামান। তিনি ২০১৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।