বিগত দুই মাসের তুলনায় গত আগস্টে দেশে ভুয়া তথ্য ও গুজবের সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য প্রচারিত হয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জড়িয়ে। এসব গুজবের বেশির ভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত হয়। এসব তথ্য জানিয়েছে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ভুয়া তথ্য ও গুজব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিজিএস। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগস্ট মাসে ৩৪০টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত হয়। এর আগে জুন ও জুলাই মাসে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩২৪ ও ২৯৬টি।
সিজিএস জানায়, আগস্টে শনাক্তকৃত ৩৪০টি গুজব ও ভুয়া তথ্যের মধ্যে ২৬৮টি ছিল রাজনীতিসংশ্লিষ্ট। অন্যান্য ভুয়া তথ্যের মধ্যে ধর্মীয় ও বিনোদন-সংক্রান্ত ১৬টি, অনলাইন ধোঁকাবাজি ১৩টি, কূটনৈতিক বিষয়ে ১১টি, পরিবেশ-সংক্রান্ত ৯টি, অর্থনৈতিক ৫টি ও সাম্প্রদায়িক বিষয়ে ২টি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগস্ট মাসে শনাক্তকৃত ৩৪০টি ভুয়া তথ্যের মধ্যে ৩৩১টি শনাক্ত করা হয় ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস ও এক্সের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে, যা মোট গুজবের ৯৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ৯টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয় বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে।
সিজিএস ভুয়া তথ্যের লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শনাক্তেও কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগস্টে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়। এই সংখ্যা ৯৬, যা মোট ভুয়া তথ্যের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ঘিরে ৮৩টি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ৪৮টি, বিভিন্ন সেলিব্রিটি নিয়ে ১৭টি, অন্তর্বর্তী সরকার ও ধর্ম নিয়ে ১৬টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ৯টি এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ৮টি ভুয়া তথ্য শনাক্তের কথা জানানো হয়েছে। আর অনির্দিষ্ট লক্ষ্যবন্তু ছিল ৪৭টি।
প্রতিবেদনের বিষয়ে সিজিএসের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য একবার ছড়িয়ে পড়লে সেটি সংশোধন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়, অথচ ক্ষতি হয় মুহূর্তের মধ্যে। ভুয়া তথ্য গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি; কারণ এটি জনগণের মতামতকে বিকৃত করে। তাই ফ্যাক্টচেকিংয়ের কাজ ক্রমাগতভাবে চালিয়ে যেতে হবে এবং ভুয়া তথ্য সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে জাতীয় পাঠ্যক্রমের সঙ্গেও বিষয়টি সংযুক্ত করা জরুরি।’