অভিভাবকত্ব নির্ধারণের নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণের নির্দেশিকা ও নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
থিঙ্ক লিগ্যাল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারীপক্ষ ও একাডেমি অব ল অ্যান্ড পলিসি জনস্বার্থে ওই রিট করে। রিটে ১৮৯০ সালের অভিভাবকত্ব ও প্রতিপাল্য আইনের ১৯(খ) ধারাটি বিশেষত সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদ এবং নারীর সমতাবিষয়ক মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়।  

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, আইনজীবী আনিতা গাজী রহমান, রাশনা ইমাম, মাসুদা রেহানা বেগম ও আয়েশা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

রুলে আইনের ১৯(খ) ধারা কেন সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল, ২৭ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতা এবং ২৮ অনুচ্ছেদে ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য না করার বিষয়ে বলা রয়েছে।

পরে আইনজীবী আনিতা গাজী রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৮৯০ সালের আইনটি মূলত ১৩৪ বছরের পুরোনো ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইন, যা একবিংশ শতাব্দীতে একেবারেই প্রযোজ্য নয়। আইনের ১৯(খ) ধারায় অভিভাবক হিসেবে মাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বিধানটি সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন।    

সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণের নির্দেশিকা ও নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন ও কার্যক্রমের অগ্রগতি জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আগামী ৪ আগস্ট প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’