নির্বাচন নিয়ে আর কেউ কথা তোলার সুযোগ পাবে না: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছয়টি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তিনি আশা করেন, এরপর আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়। এ বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে গত ৫ জানুয়ারি ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগই সংগ্রাম করেছে। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা তারা দায়িত্ব বলে মনে করে।

১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি জাতীয় পার্টি জিতেছে। একটি বিএনপির একজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন, তারপর তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়ে আজ সংসদে এসেছেন। তা ছাড়া একটা আমরা দিয়েছিলাম রাশেদ খান মেননকে, সেখানে জাতীয় পার্টি জিতে এসেছে। হাসানুল হক ইনুকে দিয়েছি বগুড়ায়, সেটা জিতে এসেছে। বগুড়া ও চাঁপাইয়ের দুই সিটে নৌকা মার্কা জয়লাভ করেছে।’

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘রংপুর মেয়র ইলেকশন নিয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারেনি। সে ইলেকশনে কিন্তু জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে, আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। কাজেই নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ–নিরপেক্ষ হয়, সেটাই কিন্তু এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আশা করি, এরপর আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না।’

জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে বিভিন্ন নির্বাচনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয় না। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছে। এটা চ্যালেঞ্জ ছিল। এই একটা সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে। তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা চালু করা হচ্ছে। এখন দলিল–পরচা ঘরে বসে নিতে পারে। যেকোনো বিল ঘরে বসে দিতে পারে। সরকার দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু হৃদয় আছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল টিম, ওষুধ, শুকনা খাবার পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাজধানীর দূষণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহর অত্যন্ত ছোট। অনেক মানুষ, প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। যে কারণে বায়ু ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকার বাইরে পরিবেশ ও বায়ু অনেক পরিশুদ্ধ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা বলি, ঢাকা খারাপ, বসবাসের উপযোগী না...তারা তো ঢাকাতেই বাস করে। ঢাকা থেকে তো বাইরে যায় না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা গালিও দেব, আবার থাকব, এটা কেমন কথা? এটা হয় না।’

আইয়ুব খান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়ার আমলে ঢাকার খাল দখলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন সরকার খাল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারের চেষ্টার অন্ত নেই।