নারীকে বেত্রাঘাত ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ২৪ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ

প্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে এক নারীকে (৩০) বেত্রাঘাত ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক। রোববার এক বিবৃতিতে তাঁরা এ ঘটনার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতি দেওয়া ২৪ বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে আছেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, সারওয়ার আলী, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রানা দাশগুপ্ত, ফওজিয়া মোসলেম, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, এস এম এ সবুর, খুশী কবির, এম এম আকাশ প্রমুখ।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘৪ এপ্রিল রাতে চুনারুঘাটে এক নারীর ওপর ফতোয়া জারির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে জানা গেছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্থানীয় সালিসে ওই নারীকে ৮২টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। তাঁর ওপর ৮০টি পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেই নারীকে এক মাস ঘরে অবরুদ্ধ থাকার আদেশও দেওয়া হয়। এ ছাড়া সালিসকারীরা ঘোষণা দেন, সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘর থেকে বের হলে তাঁকে আরও ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হবে।’

বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এসে এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনা আমাদের ব্যথিত, মর্মাহত ও চরমভাবে ক্ষুব্ধ করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, চুনারুঘাটের ঘটনার সঙ্গে ২০১৭ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরের এক ঘটনার মিল পাওয়া যায়। সেখানেও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্থানীয় সালিসে এক গৃহবধূকে দোররা মারার ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনার পর ওই নারী আত্মহত্যা করেন।

২০০০ সালে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফতোয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে এ ধরনের ঘটনায় আদালত ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার পরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিবছরই ফতোয়ার নামে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। নারীর প্রতি এসব অবমাননাকর ও নির্যাতনের ঘটনায় রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে, যা রীতিমতো হতাশাব্যঞ্জক।