তাপপ্রবাহকে দুর্যোগ ঘোষণার চিন্তা
তাপপ্রবাহ বাংলাদেশের জন্য একটি দুর্যোগে রূপ নিতে শুরু করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শহর ও গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা গরমের কারণে কাজ করতে পারছেন না; ফলে তাঁদের আয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষায় পরিবেশগত উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দিতে হবে। সে কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে একে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
রোববার তাপপ্রবাহ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) আয়োজনে রাজধানীর একটি হোটেলে বিডিআরসিএস ও জার্মান রেডক্রসের সহযোগিতায় বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীদারদের উপস্থিতিতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশে তাপপ্রবাহের মাত্রা ও এর প্রভাব হ্রাসে করণীয়গুলো চিহ্নিতকরণসহ স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে তাপপ্রবাহ–সম্পর্কিত অংশীজনদের কার্যক্রমকে আরও সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে উপায় খুঁজে বের করা।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপপ্রবাহে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। তাপপ্রবাহকে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এর প্রভাব হ্রাস করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাপপ্রবাহকে দুর্যোগ ঘোষণা করতে হবে। সে লক্ষ্য কাজ চলছে।
কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম ইউ কবীর চৌধুরী। বিডিআরসিএস তাপপ্রবাহের আগাম সতর্কতা সমীক্ষার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের বিপদগুলো চিহ্নিত করে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এম ইউ কবীর চৌধুরী বলেন, ‘সে অনুযায়ী সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে আমরা তা মোকাবিলায় কাজ করছি। কিন্তু আমাদের একার পক্ষে ভয়াবহ এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে একটি সমন্বিত কৌশলই পারে এর প্রভাবে কমিয়ে বিপদগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা কমাতে।’
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, বিডিআরসিএসের মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম ও আইএফআরসির হেড অব ডেলিগেশন আলবার্টো বোকানেগ্রা। কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন উপস্থিত ছিলেন।