রূপগঞ্জে কারখানায় চুল্লি বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬

নারায়ণগঞ্জের রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের একটি কারখানায় চুল্লি বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় এই কারখানায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্টিল কারখানায় লোহা গলানোর সময় চুল্লি বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরও একজন শ্রমিক মারা গেছেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় ৬ শ্রমিকের মৃত্যু হলো। সর্বশেষ মারা যাওয়া শ্রমিকের নাম জুয়েল (৩৫)। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক এস এম আইয়ুব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জুয়েলের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তাঁর শরীরের ৯৭ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর গোলাম রব্বানি (৩৫) নামের আরও এক শ্রমিক মারা যান। তাঁর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকার রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের কারখানায় চুল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর দগ্ধ শ্রমিকদের রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে আনার পর শঙ্কর (৪০) নামের এক শ্রমিক মারা যান।

ইনস্টিটিউট ও পুলিশ সূত্র জানায়, ইলিয়াস আলী (৩৫) নামের এক শ্রমিক বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মো. নিয়ন (২০) নামের এক শ্রমিক মারা যান গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায়। একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান আলমগীর হোসেন (৩৩) নামের আরেক শ্রমিক।

এখন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন দুই দগ্ধ শ্রমিক। তাঁরা হলেন রাব্বি (৩৫) ও ইব্রাহিম (৩৫)। রাব্বির শরীরের ৯৮ শতাংশ ও ইব্রাহিমের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কারখানাটি এখনো নির্মাণাধীন। পরীক্ষামূলকভাবে লোহা গলানোর কাজ করা হচ্ছিল। বিস্ফোরণের পর গলিত উত্তপ্ত লোহা শ্রমিকদের শরীরে পড়ে।

আড়াইহাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শহীদ আলম জানান, যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কোনো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দেখতে পাননি তাঁরা। শ্রমিকদের যে ধরনের নিরাপত্তার সরঞ্জাম ব্যবহার করার কথা, সেগুলো ব্যবহার করা হয়নি।

আরও পড়ুন

কারখানাটির ছাড়পত্র নেই। নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই চলছিল কারখানাটির উৎপাদন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের শেষে কারখানাটি ছাড়পত্রের জন্য অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে আবেদন করে। তারপর কারখানা পরিদর্শক খালিদ হাসান ও মেহেদী হাসান দুই দফায় কারখানাটি পরিদর্শন করেন। কারখানার শ্রেণি ও কাজের ধরন অনুযায়ী, শ্রমিকদের ‘যথাযথ’ নিরাপত্তা না থাকায় তাঁরা কারখানাটিকে ছাড়পত্র না দিয়ে নিরাপত্তা জোরদারের সুপারিশ করেন।

আরও পড়ুন