অধ্যাপক ও কবি হিমেল বরকতের অকালপ্রয়াণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিমেল বরকত।
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কবি হিমেল বরকত মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ রোববার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হিমেল বরকতের সহকর্মী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছিলেন হিমেল বরকত। এ সময় তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আজ সকালে হিমেল বরকতের মরদেহ রাজধানীর ধানমন্ডিতে তাঁর বোনের বাসায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাজ্জাদুল ইসলাম। তিনি জানান, আজ বাদ জোহর সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হবে। বেলা সাড়ে তিনটায় ক্যাম্পাসের টেনিস গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠেখালীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই দাফন করার কথা রয়েছে।

হিমেল বরকত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ছোট ভাই। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম হিমেল বরকতের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় উপাচার্য বলেন, হিমেল বরকতের মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি হিমেল বরকতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

হিমেল বরকতের এই অকালমৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘সহকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই বা একাডেমিশিয়ান হিসেবে হিমেল বরকত অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি মানুষের ছায়া হতে পারতেন। উনি মানুষের আশ্রয় হতে পারতেন। ওনার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের, তথা পুরো বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে যে কতখানি ক্ষতি হলো, সেটা যেকোনো একাডেমিশিয়ানের পক্ষে বোঝা সম্ভব।’

হিমেল বরকতের ছাত্র ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশীদ বলেন, ‘ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায়, তিনি (হিমেল বরকত) তা–ই ছিলেন। কীভাবে মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করা যায়, সেটা উনি শিখিয়েছেন। আর শিল্পবোধের জায়গায় তিনি পারিবারিকভাবে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ছোট ভাই। তাঁর শিল্পবোধ খুবই ধ্রুপদি। উচ্চাঙ্গ শিল্পরীতি সব সময় ওনার মধ্যে কাজ করেছে এবং এটা আমরা যারা ওনার শিক্ষার্থী ছিলাম, তাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে।’