অধ্যাপক তাহের হত্যায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন বহাল

অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে আজ মঙ্গলবার এ রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ।

গত ১৬ মার্চ আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের তারিখ (৫ এপ্রিল) ধার্য করেছিলেন বিভাগ। সে অনুসারে আজ সকালে রায় দেওয়া হলো।

রায়ের পর অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবাকে হারিয়েছি ১৬ বছর হলো। দণ্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর হলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাব।’

অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তাহেরের একসময়ের ছাত্র ও পরে বিভাগীয় সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। অপর দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই দুজন হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই শিবিরকর্মী আবদুস সালাম ও সালামের আত্মীয় নাজমুল।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেছিলেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। এসবের ওপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। অষ্টম দিনে গত ১৬ মার্চ শুনানি শেষ হয়।

আপিল বিভাগে আসামিপক্ষে আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ইমরান এ সিদ্দিক শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে তাহের আহমেদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেদিন তাঁর ছেলে সানজিদ আলভী আহমেদ মতিহার থানায় মামলা করেন।

মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে একই বিভাগের এক শিক্ষকসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা ২০০৮ ও ২০০৯ সালে আপিল করেন। আপিলের ওপর ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট।