অনলাইনে ৫৩% নারী সহিংসতা–হয়রানির শিকার

একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী আগস্টের শেষ সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, তিনি মেসেঞ্জারে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। যিনি হয়রানি করেছেন, তিনি ওই ছাত্রীর সাবেক শিক্ষক। ছাত্রী বিষয়টি অন্যদের কাছে প্রকাশ করে দেবেন জানালে শিক্ষক অশ্লীল ছবি বানিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবেন বলে শাসান। বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ওই শিক্ষকের (এখন সাময়িক বরখাস্ত) ফোনালাপের অডিও ও অশালীন প্রস্তাবের স্ক্রিনশটও ফেসবুকে স্ট্যাটাসের সঙ্গে যুক্ত করেন ওই ছাত্রী।

প্রযুক্তির প্রসারের এ যুগে ইন্টারনেট ছাড়া দুনিয়া চলে না। করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রম, অফিস, কেনাকাটা অনলাইননির্ভর হয়ে পড়েছে আরও বেশি। একই সঙ্গে বেড়েছে হয়রানিও। এ ক্ষেত্রে বয়স, শ্রেণি, পেশা, লিঙ্গ ভেদাভেদ না থাকলেও সবচেয়ে বেশি হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী।

অনলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার মাত্রা বুঝতে প্রথম আলো ও বেসরকারি সংগঠন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে উঠে এসেছে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭৯ শতাংশের বেশি কখনো না কখনো অনলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে নারী প্রায় ৫৩ শতাংশ। এই নারীদের বেশির ভাগ আপত্তিকর ও অপমানজনক মন্তব্যের শিকার হন।

প্রথম আলোর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জরিপটি চালানো হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অংশগ্রহণকারীরা। ওয়েবসাইটে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫৫ জন এবং ফেসবুকে ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮ জনের কাছে পৌঁছায় জরিপটি। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সব কটি (নয়টি) প্রশ্নের জবাব দেন ২৩৩ জন। যাঁরা সব কটি প্রশ্নের জবাব দেননি, তাঁদের মত গ্রহণ করা হয়নি। যাঁদের জবাব গ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের ৬৩ শতাংশ নারী ও ৩৭ শতাংশ পুরুষ। তাঁদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী ১১ শতাংশের বেশি। ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সী ২৭ শতাংশ ও ২৫ বছরের ওপরের বয়সী ৬১ শতাংশের বেশি। অল্পসংখ্যক ১৫ বছরের কম বয়সীও অংশ নেয়।

আপত্তিকর মন্তব্যের শিকার ৪৫% নারী

মেডিকেল কলেজের ওই ছাত্রীর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ। তিনি ২০ নভেম্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে মেয়েটির দেওয়া তথ্য যাচাই করে সত্যতা পেয়েছি। মেসেঞ্জারে যেসব বার্তা পাঠানো হয়েছে, তা অশালীন। একজন শিক্ষক হয়ে এমন বার্তা কীভাবে পাঠান বুঝতে পারি না। তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে ওই শিক্ষককে চূড়ান্ত বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে।’

প্রথম আলো–প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের জরিপ অনুসারে, ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ও অপমানজনক মন্তব্যের মাধ্যমে ৭১ শতাংশ হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হন ব্যবহারকারীরা। তাঁদের মধ্যে নারী ৪৫ শতাংশের বেশি।

অনলাইন অসুস্থ মানসিক প্রবৃত্তির মানুষের কাছে ‘মজা’ করার জায়গা হয়ে গেছে। নারীদের হয়রানি করার মাধ্যমে তারা বিকৃত বিনোদন পায়। আর অনেক নারী ডিজিটাল জ্ঞানচর্চায় কিছুটা পিছিয়ে থাকায় তাঁরা সহজে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তানিয়া হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক

ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ডিজিটাল শিক্ষামাধ্যম (জুম, মিট, টিম ইত্যাদি) ও টুইটারে তথ্য ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খোলা, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও প্রচার, শরীর ও পোশাক নিয়ে অশালীন মন্তব্য, যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের হুমকি, ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে নিপীড়ন করা ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়া ইত্যাদি হয়রানির শিকার হয়েছেন নারী–পুরুষেরা। জরিপে অংশ নেওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের ৯৯ শতাংশই ফেসবুক ব্যবহার করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক প্রথম আলোকে বলেন, অনলাইন অসুস্থ মানসিক প্রবৃত্তির মানুষের কাছে ‘মজা’ করার জায়গা হয়ে গেছে। নারীদের হয়রানি করার মাধ্যমে তারা বিকৃত বিনোদন পায়। আর অনেক নারী ডিজিটাল জ্ঞানচর্চায় কিছুটা পিছিয়ে থাকায় তাঁরা সহজে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

মানসিক চাপ তৈরি করে

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি) ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও মেয়েশিশুদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং’ নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। এটি প্রকাশের অপেক্ষায়। এই গবেষণার একজন গবেষক হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানিয়া হক। প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে পরিচালিত গবেষণাটিতে অংশ নিয়েছে গ্রাম ও শহরের ৫৮৪ নারী ও মেয়েশিশু। গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, অশালীন ভিডিও, বার্তা ও ছবির মাধ্যমে অনলাইন সহিংসতার শিকার হয়েছে শহরের ৬৪ শতাংশ এবং গ্রামের ৩৩ শতাংশ। ৩৫ শতাংশ হয়রানির শিকার হয় ভুয়া অ্যাকাউন্ট বা আইডির মাধ্যমে।

প্রথম আলো-প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের জরিপে এসেছে, ভুয়া আইডি খোলার মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ২৪ শতাংশ। অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ছবি, তথ্য, ভিডিও প্রচারের শিকার হয়েছেন ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ১৮ শতাংশ।

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপক মোহসেনা শাওনের ছবি ও নাম ব্যবহার করে বেশ কয়েকবার ফেসবুকে ভুয়া আইডি খোলা হয়েছে। প্রত্যেকবারই তিনি জানতে পেরেছেন পরিচিতজনদের মাধ্যমে। এ ঘটনাগুলো নিয়ে একধরনের মানসিক চাপ বোধ করেন বলে জানালেন মোহসেনা শাওন। তিনি বললেন, ‘মানসিক চাপ ও ভয় হয় যে কেউ আমার নাম করে পরিচিতজনের কাছে টাকা চাইতে পারে বা কোনো অপরাধমূলক কাজ করতে পারে। সেটার দায়ভার হয়তো আমার কাঁধে এসে পড়বে বা আমিই বিপদে পড়ব।’

সাইবার হয়রানির শিকার ব্যক্তিদের জীবনে কী প্রভাব পড়েছে, সে সম্পর্কে একাধিক মত প্রকাশ করেছেন জরিপে অংশগ্রহণকারীরা। ৭১ শতাংশ জানিয়েছেন ঘটনাগুলো তাঁদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করেছে। মানসিক চাপের মধ্যে পড়া ব্যক্তিদের ৪৭ শতাংশ নারী। ৫২ শতাংশের বেশি জানিয়েছেন, এসব হয়রানি তাঁদের স্বাধীনভাবে চলাচল ও মতপ্রকাশে বাধা তৈরি করেছে। এর মধ্যে নারী ৩২ শতাংশ। নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ২৫ শতাংশ। সামাজিকভাবে হেয় ও বিব্রত হয়েছেন ৩০ শতাংশ; তাঁদের মধ্যে নারী ১৭ শতাংশ। এ ছাড়া ২৪ শতাংশ আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগেছেন, ১৯ শতাংশ নিপীড়িত হচ্ছেন—এমন অনুভব করেছেন বলে জানিয়েছেন। ১৪ শতাংশের বেশি হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়ে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন।

নারীদের ক্ষেত্রে প্রতারণা বা ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ বেশি। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেছে, বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে—এমন নারীদের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বা ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা রয়েছে।
মোমেনা আকতার, সেন্টারের সহকারী পুলিশ সুপার

সাইবার হয়রানির অভিযোগ নিতে গত বছরের অক্টোবরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার গড়ে তোলে। এ বছর সেন্টারে অভিযোগ এসেছে ২৫৬টি।

সেন্টারের সহকারী পুলিশ সুপার মোমেনা আকতার প্রথম আলোকে বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে প্রতারণা বা ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ বেশি। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেছে, বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে—এমন নারীদের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বা ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা রয়েছে। আইডি হ্যাকড হয়েছে, আইডি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগ নারী-পুরুষ সমানসংখ্যক আসে।

আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানেন না ৬২ শতাংশ

সংবাদ উপস্থাপক মোহসেনা শাওন বেশ কয়েকবার ভুয়া আইডি–সংক্রান্ত হয়রানির শিকার হলেও আইনি সহায়তা আছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেননি বলে জানালেন। তাঁর বন্ধু–শুভাকাঙ্ক্ষীরা ফেসবুকে রিপোর্ট করে ভুয়া আইডিগুলো বন্ধ করেছেন।

প্রথম আলো–প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের জরিপে এসেছে, অনলাইনে হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হলে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সে সম্পর্কে জানেন না প্রায় ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৪০ শতাংশের বেশি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ডিভিশনের উপকমিশনার মীর মোদ্‌দাছছের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আইনের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে অপরাধের ধরন অনুযায়ী আইনের বিভিন্ন ধারায় একাধিক মামলা হতে পারে। অনেকে নিছক মজা করার জন্য হয়রানি করেন। কোনটা অপরাধ, কোনটা নয়, সে বিবেচনা বোধও তাদের নেই।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইনে সাইবার অপরাধসংক্রান্ত ৬ হাজার ৯৯টি মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোর বেশির ভাগই করেছেন নারীরা।

জরিপ অনুসারে, অনলাইনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইবার নিরাপত্তা ডেস্ককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে মত প্রকাশ করেছেন ৭২ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৪৭ শতাংশ। একাধিক উত্তরের সুযোগ থাকা সমসংখ্যক নারী–পুরুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুরক্ষানীতির উন্নয়ন এবং হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পদ্ধতি সহজ ও কার্যকর করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৭২ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৪৮ শতাংশ। অনলাইনে নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে বলে মত দিয়েছেন ৬৮ শতাংশ। এর ৪১ শতাংশ নারী। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনলাইনে কিশোরী ও নারীর নিরাপত্তাবিষয়ক ধারা সংযোজনের ওপর জোর দিয়েছেন ৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৩৮ শতাংশ।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের হেড অব ইনফ্লুয়েন্সিং কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার কারণে অভিযোগকারীর সফল হওয়ার দৃষ্টান্ত কম। এ ছাড়া মেয়েদের ক্ষেত্রে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রগুলো ঠিকভাবে কাজ করে না। কম বয়সী মেয়ে বা যুবা নারীদের পরিবার সমাজে আরও হেনস্থা হওয়ার ভয়ে ঘটনাগুলো চেপে যায় এবং মেয়েকে শাসন করার মধ্য দিয়ে সমাধান খোঁজে। তাঁর মতে, আইনি সহায়তা নিতে ভুক্তভোগীদের উদ্বুদ্ধ করতে আইনের প্রচার, বাস্তবায়ন ও আইনের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।

প্রতিকারে নতুন উদ্যোগ

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি তথ্যেও হয়রানির মাত্রা কতটা বেড়েছে তা বোঝা যায়। ১৬ নভেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন (পিসিএসডব্লিউ) ফেসবুক পেজ উদ্বোধন করেন। এরপরের দুদিন ১৭ ও ১৮ নভেম্বর পেজে ৬৯১টি অভিযোগ এসেছে নারীদের কাছ থেকে। এর মধ্যে ১৭০টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

এই ফেসবুক পেজে (http://m.facebook.com/PCSW.PHQ/) গিয়ে মেসেঞ্জারে অভিযোগ জানাতে পারবেন হয়রানির শিকার যেকোনো নারী বা শিশু। এ ছাড়া ই-মেইল ও হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করেও সহযোগিতা নিতে পারবেন। ই-মেইল ঠিকানা [email protected]। হটলাইন নম্বরটি হলো ০১৩২০০০০৮৮৮। এই ইউনিট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন নারী পুলিশ কর্মকর্তারা। তাঁদের কাজ হবে ঘটনার শিকার নারী ও শিশুদের বিচার পেতে সহযোগিতা করা।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ অক্টোবর মাসের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটির বেশি। এর মধ্যে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ৮৬ লাখ। বাকিরা মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের মতে, ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত তথ্য প্রচারে সচেতনতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার অভাবে অনেকে সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন। আর যাঁরা হয়রানি করছেন, তাঁদের ধর্মীয়, নৈতিক, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব রয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনে অভিযোগ ও পরামর্শের জন্য ১০৪ ও ৩৩৩—এ দুটি কলসেন্টার পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে। যেসব অভিযোগকারী আইনি ব্যবস্থা নিতে চান না, প্রযুক্তিগত সহায়তা চান—তাঁদের সহায়তা করা হবে। সমস্যার সমাধানের জন্য ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে।