‘অনেক বাধা এসেছে, থেমে যাইনি কখনো’

ফরিদা জামান। তাঁর প্রথম করা বইয়ের প্রচ্ছদ
ছবি: সংগৃহীত

একুশে পদক, সুলতান পদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া চিত্রশিল্পী অধ্যাপক ফরিদা জামান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের সুপার নিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক। অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের শিক্ষার্থী থাকাকালে ১৯৭৬ সালে হাবীবুর রহমানের ছোটদের উপন্যাস ‘বনমোরগের বাসা’-র মাধ্যমে প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তাঁর মতে, এ পেশায় বাধা আসে, হোঁচট খেতে হয়, আবার উঠে দাঁড়াতে হয়। প্রচ্ছদশিল্পে মেয়েদের চ্যালেঞ্জ ও তা উত্তরণে করণীয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ফরিদা জামান। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে নারী প্রচ্ছদশিল্পীদের চ্যালেঞ্জের কথা শুনতে প্রথম আলো কথা বলেছে দুই তরুণ প্রচ্ছদশিল্পী শিখা ও সানজিদা স্বর্ণার সঙ্গে।

প্রতিবারই বাধা ঠেলে উঠে দাঁড়িয়েছি

স্কুলে পড়ার সময় মামা খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী হাশেম খানের রাজধানীর বাসায় বেড়াতে গিয়ে আঁকাআঁকিতে আকৃষ্ট হন ফরিদা জামান। বাবা সালামত উল্লাহ জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) উপপরিচালক ছিলেন। বাবার চাকরির সুবাদে তাঁরা রাজশাহীতে থাকতেন। হাশেম খান ভাগনিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে ভগ্নিপতিকে অনুরোধ করেন। ১৯৬৯ সালে চারুকলার ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যান ফরিদা জামান। এরপর ঢাকায় মামার বাসায় থেকে ছয় মাস ক্লাস করেন তিনি।

চিত্রশিল্পী অধ্যাপক ফরিদা জামান
ছবি: সংগৃহীত

সে সময় চারুকলার ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনসুবিধা ছিল না। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন অধ্যক্ষ সৈয়দ শফিকুল হোসেন চারুকলার পেছনের দিকে একটি দোতলা ভবনের তিনটি কক্ষে ছাত্রীদের থাকার অনুমতি দেন। ফরিদা জামান ছয় থেকে সাতজন ছাত্রীর সঙ্গে নতুন হোস্টেলে উঠে যান। তিনি বলেন, ‘ওই সময় ছাত্রদের দেখতাম আঁকাআঁকি করে রোজগার করছে। আমরা দশ বোন, এক ভাই। ছেলেদের কাজ দেখে ভাবলাম, বাসা থেকে পড়াশোনার খরচ আর নেব না। নিজেই রোজগার করব। তখন অবশ্য ছেলেদের মতো কাজের সুযোগ পাইনি। কিন্তু চর্চা করতাম, কীভাবে নিজেকে রোজগারের জন্য দক্ষ করে তোলা যায়। পথ চলতে চলতেই মানুষের চেহারার অভিব্যক্তি ধরার চেষ্টা করতাম। পথে হেঁটে যাওয়ার সময়, সাইকেল চালানো অবস্থায়, রিকশায় বসা অবস্থায় মানুষের মুখের ভাব কেমন থাকে, তা লক্ষ করতাম। রোজগার করার আগ্রহ থেকেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার তাগিদ তৈরি হয়।’

চ্যালেঞ্জ নেওয়ার তাগিদ থেকে কঠিন লড়াইয়ে শামিল হন ফরিদা জামান। তাঁর ভাষায়, ‘জীবনটাই কেটেছে লড়াই করে।’

ফরিদা জামান জানান, ১৯৭২-৭৩ সালের দিকে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে অলংকরণের (ইলাস্ট্রেশন) কাজ করেন তিনি। এর কিছু পরে টাইম ম্যাগাজিনের তিন থেকে চারটা প্রচ্ছদের কাজ করেন। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চিত্রশিল্পী হিসেবে নির্বাচিত হলেও যোগ দিতে পারেননি। ওই সময় বৃত্তি নিয়ে মাস্টার্স করতে ভারতে চলে যান তিনি।

১৯৭৬ সালে প্রকাশিত ‘বনমোরগের বাসা’ বইয়ের প্রচ্ছদ করার মধ্য দিয়ে প্রচ্ছদশিল্পে আত্মপ্রকাশ করেন অধ্যাপক ফরিদা জামান
ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৬ সালে মুক্তধারা থেকে প্রকাশিত ‘বনমোরগের বাসা’ বইয়ের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেন ফরিদা জামান। প্রথম প্রচ্ছদের কাজ করে খুব আনন্দ পেয়েছিলেন বলে জানান এই শিল্পী। প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে তিনি শিশুতোষ বইয়ের কাজই বেশি করেছেন বলে জানান।

ফরিদা জামান বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে নারী হিসেবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। তবে সেটি আমার পেশাকে থামিয়ে দিতে পারেনি।’

প্রচ্ছদ নিয়ে কাজ করায় অনেক সহশিল্পীর কাছ থেকে সমালোচনা শুনতে হয়েছিল ফরিদা জামানকে। তিনি বলেন, ‘তাঁরা আমাকে বলতেন, এত ভালো আঁকেন, কেন প্রচ্ছদ করেন? তাঁরা ভাবতেন, এতে সময় নষ্ট হয়। প্রচ্ছদ করলে ছবি আঁকায় সময় দেওয়া যায় না। কিন্তু আমি এ রকম বাধা কখনো অনুভব করিনি। এর সঙ্গে আমার আর্থিক প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও যুক্ত ছিল। সমানতালে ছবি আঁকাতাম, প্রচ্ছদও করতাম। হয়তো তাঁরা বিষয়টি সেভাবে অনুধাবন না করেই সমালোচনা করতেন।’

অলংকরণে দক্ষ হতে হলে ড্রয়িং ভালো জানতে হবে বলে মনে করেন ফরিদা জামান। তাঁর মতে, বইয়ের প্রচ্ছদ ও অলংকরণের জন্য অঙ্কনে (ড্রয়িং) দক্ষতা থাকা জরুরি।

ফরিদা জামান বলেন, ‘শিল্পী হাশেম খান ও রফিকুন নবীর ড্রয়িংয়ে অসাধারণ দক্ষতা আছে। ড্রয়িং ভালো জানা না থাকলে ইলাস্ট্রেশন (অলংকরণ) করা সত্যি কঠিন। আমি ড্রয়িং করতে ভালোবাসতাম। তাই প্রচ্ছদ ও অলংকরণে আকৃষ্ট হই। রান্না করতে করতেও প্রচ্ছদের জন্য বইয়ের পাণ্ডুলিপি পড়েছি। ব্যাগে পাণ্ডুলিপি রেখে দিতাম। যখনই সময় পেতাম, প্রচ্ছদ কেমন হবে, সেটা ঠিক করার জন্য পাণ্ডুলিপি পড়তাম। ছেলেমেয়েদের ঘুম পাড়িয়ে গভীর রাতেও কাজ করেছি। দিনে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি ঘুমাতাম না।’

অধ্যাপক ফরিদা জামানের করা তিনটি বইয়ের প্রচ্ছদ
ছবি: সংগৃহীত

স্বামী চিত্রশিল্পী শওকাতুজ্জামান ছিলেন ফরিদা জামানের সহপাঠী। তিনি পরে চারুকলা অনুষদের শিক্ষক হন। ফরিদা জামান বলেন, তাঁর স্বামী সকালে উঠে অবাক হয়ে বলতেন, ‘এত কাজ কীভাবে করলে!’

কত বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন, এর সঠিক হিসাব জানা নেই ফরিদা জামানের। জানান, বছর পাঁচেক আগে বইয়ের শেষ প্রচ্ছদটি করেছেন। এখন শুধু আঁকাআঁকিতেই নিবিষ্ট থাকেন।

প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে মেয়েদের তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। এর কারণ জানতে চাইলে ফরিদা জামান বলেন, ‘মেয়েরা চিত্রায়ণে কাজ করলেও প্রচ্ছদে তাঁদের সেভাবে দেখা যায় না। তবে এ কাজে আগ্রহ থাকা জরুরি। হয়তো নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের কারণেই মেয়েদের প্রচ্ছদ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম। প্রচ্ছদশিল্পীদের মূল্যায়ন কম হয়, সেটাও একটা কারণ। অনেক প্রকাশক কাজ করিয়ে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি করেন। ৪৫ বছর শিক্ষকতা করতে গিয়ে দেখেছি, মেয়েরা ভালো কাজ করলেও ধরে রাখতে পারেন না।’

প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই মেয়েদের এগোতে হবে উল্লেখ করে ফরিদা জামান বলেন, ‘জীবনে অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু থেমে যাইনি কখনো। প্রতিবারই বাধা ঠেলে উঠে দাঁড়িয়েছি।’

তরুণ প্রচ্ছদশিল্পী শিখা
ছবি: সংগৃহীত

নারী প্রচ্ছদশিল্পীরা কাজের সুযোগ কম পান

মায়ের চোখ এড়িয়ে শৈশবে দেয়ালসহ ঘরের বিভিন্ন স্থানে আঁকাআঁকি করেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে খুব কম মানুষই পরে পেশাদার আঁকিয়ে হন। শাহানারা নার্গিস ওরফে শিখা তাঁর ছোটবেলার আঁকাআঁকির প্রতিভা পরিণত বয়সেও ধরে রাখেন। তিনি এখনকার সময়ের একজন জনপ্রিয় প্রচ্ছদশিল্পী। বইয়ে প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে তিনি ‘শিখা’ নাম ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, ‘আঁকাআঁকিটা আমার মধ্যে জন্মগতভাবে আছে। ছোটবেলায় আমি সামনে দেয়ালে-আলমারিতে, যা কিছু পেতাম, তাতে আঁকাআঁকি করতাম।’

শিখা বলেন, ‘পুরুষের তুলনায় নারী প্রচ্ছদশিল্পীরা কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ কম পান। তাই তাঁদের লড়াইটা কঠিন। এমনও হয়েছে, আমাকে দিয়ে বইয়ের ভেতরে অলংকরণ করিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে প্রচ্ছদ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুরুতে (২০১৪ সালের আগে) এমন কয়েকবার ঘটার পর আমি আর ছাড় দিইনি। প্রকাশনা সংস্থাকে বলে দিয়েছি, অলংকরণ আমাকে দিয়ে করালে প্রচ্ছদও করাতে হবে।’

২০১৬ সালে শিখার করা প্রচ্ছদের বই প্রথম বইমেলায় আসে। তবে ২০১৪ সাল থেকে তিনি শিশুতোষ বইয়ের প্রচ্ছদ করে আসছেন। তারও আগে থেকে শুরু করেন অলংকরণের কাজ।

তরুণ প্রচ্ছদশিল্পী শিখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। অঙ্কনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও শুধু আগ্রহ ও ভালো লাগা থেকেই তিনি এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন।

শিখা জানান, তিনি কখনো আধাআধি বই পড়ে বা সারসংক্ষেপ পড়ে প্রচ্ছদের কাজে হাত দেন না। পুরো বই পড়েন, বইয়ের বিষয়বস্তু অনুধাবন করেন, তারপর প্রচ্ছদের নকশা করেন।

কাজের ক্ষেত্রে খুঁতখুঁতে ভাব আছে জানিয়ে শিখা বলেন, ‘অনেক সময় কাজ শেষ করার পর বারবার দেখি। মনে হয়, এমন না করে অন্যভাবে করলে হয়তো কাজটা ভালো হতো। আলোটা অন্যদিক দিয়ে দিলে বা রং আরও গাঢ় করলে কি ভালো হতো! অনেক সময় পুরোপুরি সন্তুষ্টি আসে না। তবে আমি সব সময় চেষ্টা করি আমার সর্বোচ্চটা দিতে।’

প্রচ্ছদশিল্পী শিখার করা দুটি বইয়ের প্রচ্ছদ
ছবি: সংগৃহীত

কাজ চাইলে অনেকে জবাব পর্যন্ত দিতেন না

আর কয়েক দিন বাদেই ২৩ বছরে পা দেবেন সানজিদা আক্তার ওরফে স্বর্ণা। বইয়ে প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে তিনি লেখেন ‘সানজিদা স্বর্ণা’ নাম।

২০২০ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে নাম লেখান সানজিদা। বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন তিনি। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য গ্রাফিকসের কাজ শিখছিলেন। সে সময় বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে এ কাজে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়।

যেকোনো কাজের শুরুতে বেশি লড়াই করতে হয়। সানজিদার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে বিভিন্ন প্রকাশনীর গ্রুপে কখনো কখনো প্রকাশকদের কাছে কাজ চেয়ে মেসেজ পাঠাতাম। অনেকে মেসেজ সিন করলেও জবাব পর্যন্ত দিতেন না।’

তরুণ প্রচ্ছদশিল্পী সানজিদা স্বর্ণা
ছবি: সংগৃহীত

তরুণ প্রচ্ছদশিল্পী সানজিদা স্বর্ণা। ছবি: সংগৃহীত২০২০ সালের বইমেলায় সানজিদার করা প্রচ্ছদে সাতটি বই আসে। তাঁর প্রথম কাজ ছিল বাংলা প্রকাশনার ‘উদ্যোক্তার অ আ ক খ’। বছরজুড়ে গল্প, কবিতা, উপন্যাসের বইয়ের প্রচ্ছদ করেন তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ের বইয়ের প্রচ্ছদ করেন।২০২১ সালের বইমেলায় কয়েকটি প্রকাশনীর ২৬টি বইয়ের প্রচ্ছদ করেন তিনি। এ বছর প্রচ্ছদ করেছেন ১০টি বইয়ের। সানজিদা জানান, গত দুই-আড়াই বছরে ৮৫টির মতো বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন তিনি।

থ্রিলার বইয়ের প্রচ্ছদ করতে বেশি ভালো লাগে বলে জানান সানজিদা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বইয়ের প্রচ্ছদের ক্ষেত্রে চরিত্রগুলোকে তুলে আনার চেষ্টা করি। লেখক-প্রকাশক কী ধরনের প্রচ্ছদ চাইছেন, সেই ভাবনাও শুনে নিই।’

সানজিদা স্বর্ণার করা দুটি বইয়ের প্রচ্ছদ
ছবি: সংগৃহীত

চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্র নিয়ে বলতে গিয়ে সানজিদা বলেন, কিছু প্রকাশক ও লেখকের ব্যবহারে মনে আঘাত লাগে। অনেক সময় তাঁরা অনেক প্রচ্ছদ করিয়ে পরে তা বাতিল করে দেন। অনেক সময় কাজ ঝুলিয়ে রেখে দেন। বার্তা পাঠালে জবাব দেন না। শেষ পর্যন্ত পারিশ্রমিকও দেন না। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, একই কাজ তাঁকে দিয়ে পরে না জানিয়ে অন্যকে দিয়ে করিয়ে ফেলেন, যা তাঁর কাছে খুবই অসম্মানজনক লাগে।

মেয়ে হিসেবে আরেকটি চ্যালেঞ্জ অনুভব করেন সানজিদা। তাঁর ভাষ্যে, ছেলেরা যেভাবে প্রকাশক বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা বা যোগাযোগ রাখেন, মেয়েরা সেভাবে পারেন না। এ কারণে মেয়েরা কাজও কম পান।