অন্তরীণ থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই এক নম্বর কাজ: মির্জা ফখরুল ইসলাম

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

অন্তরীণ থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই এক নম্বর কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যিনি গণতন্ত্রের নেত্রী, দীর্ঘকাল যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁকে বের করে আনাটা এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। এটা এক নম্বর কাজ।

সরকারের নির্বাহী আদেশে আরও ৬ মাস খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল আলোচনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির কমিউনিকেশন সেল-এর আয়োজনে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ, গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম, সমাজকে মুক্ত করবার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে আমরা জয়ী হব। যদি ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করা যায়। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সেই গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করতে সক্ষম হব।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘মূল বিষয়টা হচ্ছে—গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা। শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণের মধ্যেও সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্রের পক্ষে। তারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে, ভাষার অধিকার ফিরিয়ে আনতে জয়ী হয়েছে।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে সারা পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে একটি গোষ্ঠীর স্বার্থে কী অর্থনৈতিক, কী রাজনৈতিক, কী সামাজিক ক্ষেত্রে চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বাংলাদেশে কী হচ্ছে? আজকে বাংলাদেশে যে বৈষম্য, মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোটের অধিকার হরণ, সংবাদপত্র, মত, ব্যক্তির স্বাধীনতা সবকিছু হরণ করা হয়েছে। আজকে বাংলাদেশ জনগণ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না, এ দেশে এখন আওয়ামী লীগ ও তার ‍সুবিধাভোগী শ্রেণি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এই সরকার গণতন্ত্রের সবকিছুকে হরণ করেছে।’ সেসময় তিনি এই অবস্থা থেকে উত্তরণে ইস্পাত-কঠিন ঐক্য প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজকে কোনো কিছুই নেই। মানুষের যে মৌলিক অধিকার তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে তারা ২০১১ সালে সংবিধানের যে সংশোধনী পাস করেছে, তা চতুর্থ সংশোধনীর চেয়েও খারাপ। জনগণের ক্ষমতার উৎসকে তারা এই সংশোধনীর মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।’

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বেগম জিয়াকে মুক্ত করলে গণতন্ত্রের মুক্তি আসবে। কিন্তু সেই মুক্তি নিশ্চিত করতে হলে আমাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কী করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা রাস্তায় নামতে পারব, আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া আমাদের অন্য কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপির কমিউনিকেশন সেলের প্রধান জহিরউদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।