অন্যের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন, যুবক গ্রেপ্তার
পাত্র যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। ওই দেশে নাকি ব্যবসা রয়েছে তাঁর। দেশে এসেছেন শুধুই বিয়ে করার জন্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসব তথ্য দিয়ে ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন এক যুবক। তবে এসব তথ্যের একটিও সত্যি নয়। এমনকি সেখানে ব্যবহার করা ছবিটিও অন্য একজনের। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এমন বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ আর রাকিব খান (২৫) নামের ওই যুবককে।
বিজ্ঞাপনে যাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তিনি র্যাংকস এফসি প্রপার্টিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানভীর শাহরিয়ার। বিষয়টি নজরে এলে ২৪ আগস্ট চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন তিনি। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর থেকে রাকিব খানকে গ্রেপ্তার করে ডবলমুরিং থানা–পুলিশ।
গ্রেপ্তার রাকিব খান দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার চৌপুকুরিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি দিনাজপুরের কেবিএম কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ফেসবুকের একটি গ্রুপে পাত্রীর সন্ধান চেয়ে এ আর রাকিব খান ও রাসিফ শফিক নামের আলাদা দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে একই পোস্ট করা হয়। ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘সিরিয়াস পোস্ট’। সেখানে নানা তথ্যের পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়, পাত্রের নিউইয়র্ক সিটিতে নিজস্ব বাড়ি আছে। মা–বাবা বেঁচে নেই। বোন আছে, তবে বিবাহিত। বিজ্ঞাপনে পাত্রের উচ্চতা ও ওজনও উল্লেখ ছিল।
পাত্রের বিবরণের পাশাপাশি ‘কেমন পাত্রী চাই’ মর্মে পাত্রীর যোগ্যতাও উল্লেখ করা হয়। তাতে লেখা হয়, পাত্রীর উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চির ওপরে হতে হবে। ওজন ৫০ থেকে ৯০ কেজির মধ্যে হলে চলবে। দরিদ্র হলে সমস্যা নেই। আপত্তি নেই সন্তান থাকলেও। ফেসবুক পোস্টে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়ে একটি নম্বরও জুড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন প্রথম আলোকে বলেন, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে রাকিব খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে রাকিব জানান, ফেসবুকে লাইক ও ফলোয়ার বাড়ানোর আশায় তানভীর শাহরিয়ারের ছবি ব্যবহার করে ‘পাত্রী চাই’ পোস্ট দিতেন তিনি। তাঁর লক্ষ্য ছিলেন বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া নারীরা।
তানভীরের ছবি ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাকিবের বরাত দিয়ে ওসি জানান, ছবিটি তাঁর ভালো লাগত, তাই ব্যবহার করেছেন। তানভীরের ছবি ব্যবহার করে চালু করা আইডি দিয়ে তিন থেকে চারজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। তবে তাঁদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়নি বলে দাবি রাকিবের।
আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি রাকিব অস্বীকার করলেও কেউ তাঁর প্রতারণার শিকার হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।