আইনের আওতায় আসছে ট্যুর অপারেটররা

জাতীয় সংসদ ভবন
ফাইল ছবি

ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ জন্য নতুন একটি আইন করতে আজ শনিবার জাতীয় সংসদে বিল তোলা হয়েছে। দেশের পর্যটনশিল্প বিকাশে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম পরিচালনা এবং পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এ আইন করা হচ্ছে।

এ আইন হওয়ার পর ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড পরিচালনার জন্য সরকারের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ থেকে সনদ নিতে হবে। আইনটি কার্যকর হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিদ্যমান ট্যুর অপারেটরগুলোকে নিবন্ধন সনদ নিতে হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল ২০২১’ তোলেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলটি তোলার সময় আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম। তিনি বলেন, ট্যুর অপারেশন অব বাংলাদেশ (টুয়াব) দেশের পর্যটন কার্যক্রমকে একটি জায়গায় নিয়ে এসেছে। তাদের কার্যক্রম ব্যাহত করতে এ আইন করা হয়েছে। তাদের পাশ কাটিয়ে আইনটি করা হয়েছে। টুয়াবকে এখন নিবন্ধনের জন্য বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হবে।

জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রমে সহায়তা ও একটি বিধিবদ্ধ বিধানের আওতায় আনতে এ আইন করা হচ্ছে। এ আইন তাদের কার্যক্রমে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না।

বিলে বলা হয়েছে, নিবন্ধন সনদ ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যটকদের জন্য ভ্রমণসেবা–সংশ্লিষ্ট আবাসন, আহার বা আপ্যায়ন, পরিবহন, পর্যটন আকর্ষণ–সংশ্লিষ্ট স্থান পরিদর্শন, পরিভ্রমণসেবা বা অন্যান্য পর্যটন–সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে দলভিত্তিক বা একক ট্যুর আয়োজন ও পরিচালনা ও ট্যুর গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

বিদেশি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে।

প্রস্তাবিত আইনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে তার জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাসের জেল ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বিধান করা হয়েছে। এ আইনের অপরাধ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিচার করা যাবে।

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনে অনুমতি

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করতে হলে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন ও সনদ নিতে হবে—এমন আইন করছে সরকার। এ জন্য গতকাল শুক্রবার মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এ–সংক্রান্ত ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১’ সংসদে তুলেছেন। পরে বিলটি দুই মাসের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে কোনো শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র চালালে দুই বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, শিশু বা ক্ষেত্রমতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বিনোদন, চিকিৎসা, শিক্ষা ও শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি তিন মাসে একবার করে শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে।

বিলে বলা হয়েছে, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করলে বা তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হবে।
যেসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এখন পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোকে নিবন্ধন নিতে হবে। তখন সব কটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে আসবে।

‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১’ সংসদে

গতকাল মোংলা বন্দরের স্থাপনা ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান রেখে ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১’ সংসদে তোলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। পরে বিলটি দুই মাসের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।