আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

ধর্ম
ধর্ম

আজ ১২ রবিউল আউয়াল। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

আরবের মরুপ্রান্তরে ১ হাজার ৪৪৯ বছর আগের এই দিনে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আরব সমাজ যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে ছিল, তখন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সারা বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন মহানবী। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এই বার্তা প্রচার করেন। ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ রোববার সরকারি ছুটি থাকবে। দেশের বিভিন্ন মসজিদে মহানবীর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

বাণী

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নারীর মর্যাদা ও অধিকার, শ্রমের মর্যাদা, মনিবের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট ভাষায় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তাঁর বিদায় হজের ভাষণ মানবজাতির জন্য চিরকালীন দিশারী হয়ে থাকবে। দুনিয়ায় তাঁর আগমন ঘটেছিল আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশ্ববাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা অনুসরণের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। এই দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

কর্মসূচি

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন গতকাল শনিবার ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব পাশে ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখ মাহফিলে বয়ান করবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতারের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় ১০ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্মের ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া ইসলামি ক্যালিগ্রাফি ও মহানবী (সা.)-এর জীবনভিত্তিক গ্রন্থ প্রদর্শনী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলা, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, কিরাত ও হামদ-নাত মাহফিল, রাসুল (সা.)-এর শানে স্বরচিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। প্রকাশ করা হবে বিশেষ স্মরণিকা।

আজ বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর হোসেনি দালান জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় জসনে জুলুশে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মিলাদ মাহফিল আয়োজন করবে তরিকতে মাওলা গ্রুপ বাংলাদেশ।

আজ বাদ আসর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করবে আওয়ামী লীগ। আর বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে বিএনপি।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ রোববার জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।