আট কিমিতেই যত ঝক্কি

কুমিল্লা–নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের এ ছবিটি সম্প্রতি কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
কুমিল্লা–নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের এ ছবিটি সম্প্রতি কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

কোথাও সড়কে গর্ত হয়ে এবড়োখেবড়ো দশা। কোথাও সড়ক ভেঙে গেছে। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় একাকার অবস্থা। তার ওপর এ পথে নিয়মিত চলে ভারী যানবাহন। খানাখন্দে কোনো গাড়ির চাকা পড়ে গেলে সড়কটিতে সারা দিনের জন্য লেগে যায় যানজট। তখন ভোগান্তির আর কোনো সীমা থাকে না। বলা হচ্ছে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের কথা।

গত সোমবার দুপুরে সড়কটির কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার ছয়বাড়ি এলাকায় ইটের খোয়াবাহী একটি পিকআপ ভ্যানের চাকা গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যায়। তখন মহাসড়কের দুই দিকে আট কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এক বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে এ রকম ভোগান্তির মধ্য দিয়েই যাত্রী ও চালকেরা চলাচল করছেন। এ সড়ক দিয়ে নোয়াখালী ছাড়াও চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার ছয়টি উপজেলার বাসিন্দারা নিয়মিত যাতায়াত করে।

বরুড়া থেকে কুমিল্লাগামী বলাকা পরিবহনের যাত্রী একরামুল হক বলেন, এ রাস্তায় প্রায়ই গর্তে পড়ে যানবাহন বিকল হয়ে যায়। তখন যানজটের সৃষ্টি হয়। রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। মাঝেমধ্যে ট্রাক উল্টেও যায়।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা নগরের টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ৫৯ কিলোমিটার। এ মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার থেকে লালমাই উপজেলার বাগমারা পর্যন্ত আট কিলোমিটার অংশে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। এবারের ভারী বর্ষণ ও টানা বৃষ্টিতে সড়কটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ওপর লাকসাম-আখাউড়া ডাবল রেললাইনের মাটি আনা-নেওয়ার কাজে অন্তত ১৫০টি ভারী ট্রাক প্রতিদিন চলাচল করছে। ভাঙাচোরা সড়কের মধ্যে এসব যানবাহন চলার কারণে এক বিপর্যস্ত অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।

সরেজমিনে ৭ অক্টোবর ও গত সোমবার দুপুরে পদুয়ারবাজার হক এন্টারপ্রাইজের সামনে, হাজারী ফিলিং স্টেশন, চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাঁদপুর জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, দত্তপুর ফিলিং স্টেশন, বাগমারা বাজার এলাকার মতো বিভিন্ন স্থানে সড়কে অন্তত সহস্রাধিক বড় বড় গর্ত দেখা গেছে। এসব গর্তের কারণে হেলেদুলে চলছে যানবাহন।

এ মহাসড়কের নিয়মিত অটোরিকশাচালক আবদুল আউয়াল বলেন, ‘জান হাতে রেখেই গাড়ি চালাচ্ছি। এ সড়কে বৃষ্টির সময় কাদা, গরমকালে বালু ওড়ে।’

সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ সাইফউদ্দিন বলেন, ‘কুমিল্লা নগরের টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত পুরো সড়ক চার লেন হবে। এ জন্য ২ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ সড়কের মধ্যে পদুয়ারবাজার অংশের অবস্থা খুবই নাজুক। বৃষ্টির কারণে এত দিন কাজ করা যায়নি। এখন আমরা গর্তগুলোর মধ্যে বালু এবং তার ওপরে ইট বসিয়ে রোলার দিয়ে কাজ করব। পুরো সড়ক সংস্কার করতে হলে আরও সাত-আট মাস সময় লাগবে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সড়ক দুর্বল হয়ে পড়েছে। জনভোগান্তি কমানোর জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’