আন্তর্জাতিক যুব দিবস আমরা রচি সমৃদ্ধ আগামী

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: বিশ্বব্যাপী তরুণ ও যুবদের সমৃদ্ধ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা আন্তর্জাতিক যুব দিবসের উদ্দেশ্য। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০০ সালের ১২ আগস্ট থেকে এটি পালন করা হচ্ছে।
এ দিবসের মধ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে তরুণ ও যুবসমাজকে সচেতন করা হয়। এ বছর এ দিবসের স্লোগান হলো ‘তারুণ্যের নাগরিক সম্পৃক্ততা’। বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ৩০ ভাগই তরুণ ও যুবক। এরাই দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি।
তরুণসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় আরও বেশি সম্পৃক্ত করা এবং সে ব্যাপারে রাষ্ট্র ও পরিবারের সহযোগিতা বিশেষ প্রয়োজন। এখন আলোচনা করবেন মুনির হোসেন।

মুনির হোসেন: দেশের এক-তৃতীয়াংশ যুবক-যুবতী। বিশ্বে এই মুহূর্তে যুবক–যুবতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এদের অর্ধেকেরও বেশি এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলে রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পাঁচ কোটির বেশি তরুণ-তরুণী। বিশ্বের তরুণসমাজের অর্ধেকেরও বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এদের অনেকে স্বাক্ষর পর্যন্ত করতে পারে না। এদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য-চিকিৎসার তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। তরুণসমাজের বড় একটা অংশ কর্মহীন। বাংলাদেশে এখন নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি। কোনো দেশের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। এ সুযোগ এমনিতে আসেনি। এটা একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দেশ সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করবে।
আমাদের জন্ম ও মৃত্যুর হার দুটোই কম। সে জন্য আমরা এখন জনসংখ্যা মুনাফার সুযোগ পাচ্ছি। বাংলাদেশে এখনো বাল্যবিবাহের হার বেশি। জন্মহার কমলেও এশিয়ার মধ্যে বেশি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৬৪ শতাংশ। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। এর মধ্যে পাস করেছে সাত লাখ।
প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে ঢুকছে। বিভিন্ন কারণে যুবসমাজের ৩০ শতাংশের বেশি দেশের অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখতে পারছে না। আমাদের সমস্যা কোথায়? আমাদের ভালো নীতি আছে। আমাদের নীতির প্রয়োগ ও সম্পদের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষায় বিনিয়োগ কম। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের জন্য এখানে বিনিয়োগ অবশ্যই জরুরি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে যুবসমাজের দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, ছেলে–মেয়ের বৈষম্য দূর করা একান্ত জরুরি। এসব কাজ করতে পারলে তারা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক: জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুব সম্প্রদায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের যুবসমাজের উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি অবদান রাখতে পারে। এখন আমাদের আত্মকর্মসংস্থানকে গুরুত্ব দিতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তা করতে পারে। আমাদের তরুণেরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। মাশরাফি-সালমা-জাহানারাদের মতো তরুণেরা এখন দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে দেশের স্বাধীনতা পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তরুণদের ভূমিকা রয়েছে।
দেশে এখন পাঁচ কোটির বেশি তরুণ রয়েছে। ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত তরুণ ধরলে শিশু-কিশোর তরুণের মোট সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। তরুণ, শিশু–কিশোর—সব মিলে দেশের এই ৭০ শতাংশ মানুষের নৈতিক, আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করা জরুরি। এটা করতে পারলে তরুণেরা আমাদের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দিতে পারবে। আমাদের সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক ঘটনা হলো রূপকল্প ২০২১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সফল উদ্যোগ গ্রহণ। এগুলো কেবল কিছু শব্দ না, একটি বিপ্লবের দর্শন। জননেত্রী শেখ হাসিনা এই বিপ্লবের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন তরুণদের হাতে। তিনি বুঝতে পেরেছেন তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তরুণ বয়সেই আমি সাংসদ ও মন্ত্রী হই। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ-বিষয়ক উপদেষ্টা একজন আধুনিক তরুণ ও স্বপ্নদ্রষ্টা। সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্নই ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২১। তরুণদের ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি—সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে তরুণেরা ভবিষ্যতের স্বপ্নের বাংলাদেশের নির্মাতা হবে।

হরিপদ দাস: শিক্ষিত মানুষ তার নিজের কর্মসংস্থান নিজেই করে নিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থায় এই মুহূর্তে সব মানুষকে শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব না। ২০১১ সালে জাতীয় দক্ষতা নীতি হয়েছে। শিক্ষার সঙ্গে তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ননীতির প্রচলিত ধারণার সঙ্গে নতুন ধারণা কাজে লাগাতে হবে।
২২টি নতুন ধারণা এসেছে। এসব ধারণাও কাজে লাগাতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা থেকে একটি গবেষণা করেছি। মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ। উচ্চমাধ্যমিকে সেটা হয়েছে ১০ লাখ। মাঝের এ সংখ্যা কোথায় গেল? এসব নিয়ে কাজ করতে হবে।
পাঁচ কোটির বেশি তরুণের এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার আওতায় আসছে না। এদের কী হবে? এদের নিয়ে আমরা কাজ করি। লেখাপড়া না করে অন্যের কাছ থেকে শিখেও দক্ষতা অর্জন করা যায়। ২০১২ সালে সরকার এটা দক্ষতা উন্নয়ননীতির মধ্যে এনেছে। আমরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে প্রশিক্ষণের একটি কাঠামো তৈরি করে ৫০০ জন ওস্তাদ ঠিক করলাম। তঁারা একটা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে প্রত্যেকে দুজন করে এক হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রশিক্ষণ শেষে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটল। এদের প্রায় ৯০ শতাংশ প্রশিক্ষক তাদের প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের নিজেদের কাজে লাগাতে চাইল। তারা বলল, ‘আমরা ঋণ গ্রহণ করব। ব্যবসা সম্প্রসারণ করব। এরা খুব ভালো কাজ শিখেছে, এদের কাজে লাগালে ব্যবসার উন্নয়ন হবে ইত্যাদি।’ তাই আমাদের অদক্ষ তরুণদের এ ধরনের প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।

মোহাম্মদ মামুন মিয়া: তরুণদের সমৃদ্ধ আগামী থেকে সমৃদ্ধ বর্তমানের বিষয়টি ভাবতে হবে। তরুণদের একটি বড় অংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। পড়ালেখার সঙ্গে চাকরির িমল নেই। প্রতিবছর ২০ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে ঢুকছে। এদের ১২ থেকে ১৩ লাখ মানুষ কাজের সুযোগ পাচ্ছে। সাত লাখ বেকার থাকছে। এভাবে বেকারের সংখ্যা বেড়ে কোটি পার হয়।
এদের জন্য সরকারের ব্যবস্থা কী? সেটাও একটি প্রশ্ন। আমরা জানি, সরকারের একার পক্ষে এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষ করে বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সম্পদের সমান বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। আমরাও এসব নিয়ে ভাবছি। তবে সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারলে ভবিষ্যতে আমাদের তরুণেরা আরও এগিয়ে যাবে।

জাহানারা আলম: খুব ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। তখন অনেক সমালোচনা শুনতে হতো। অনেকে বলত, ‘ও মেয়ে, ও কেন এভাবে খেলাধুলা করবে।’
২০০৭ সালে জাতীয় দলে ক্রিকেট খেলি। তখনো কিছু সমস্যা ছিল। তবে আমার পরিবারসহ আত্মীয়স্বজন সবার থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। সে অর্থে আমি খুব বেশি সমস্যা অনুভব করিনি।
২০০৮ সালে দেশের বাইরে খেলতে যাই। তখন এলাকায় সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। সবাই বলে, মেয়ে হয়েছে তো কী হয়েছে, সে আমাদের গর্ব। এভাবে আমার এগিয়ে চলা। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। এরপর থেকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। সারা দেশে এখনো অনেক মেয়ে আছে, যারা ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় আসতে চায়। কিন্তু অভিভাবকসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা কাজ করছে। তরুণীদের সামনে আসার জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

সোনম সাহা: বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ নীতি করেছে। তাই প্রতিটি ব্যাংক থেকে নারী উদ্যোক্তারা ইচ্ছে করলে ক্ষুদ্রঋণ নিতে পারে। তারা ঋণ নিচ্ছে। আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। আয় করছে। সংসারে, পরিবারে ও দেশের অর্থনীতিতে এটি অবদান রাখছে।
কিন্তু সিদ্ধান্ত কি তারা নিতে পারছে? নারী ব্যবসা করবে কি না বা কত দিন করবে, এ সিদ্ধান্ত তার স্বামীসহ অন্য পুরুষদের। সিদ্ধান্তগ্রহণে নারীরা কতটুকু আসতে পারছে, সেটি একটি বিষয়।
সমাজে সমতার নীতি কোথায়। একদিকে শিক্ষায় ভর্তি হচ্ছে, অন্যদিকে ঝরে পড়ছে। আবার সবাই কি একই পড়া পড়ছে? এমন অনেক প্রশ্ন অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে। একজন লেখাপড়া শিখে ভালো চাকরি করছে। আরেকজন হয়তো ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে অনিশ্চিত জীবনের দিকে যাচ্ছে। আবার আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতা ও আদর্শের জায়গা কতটুকু আছে, এমন অনেক প্রশ্ন রয়েছে, যেখানে আমাদের কাজ করতে হবে। কারও আদর্শিক জায়গা ঠিক না থাকলে সে প্রযুক্তিসহ সবকিছুর অপব্যবহার করবে।

রাকিবুল হাসান: পাঁচ কোটির বেশি যুবসমাজ। গবেষণা, সিদ্ধান্তগ্রহণ, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ—এসব জায়গায় যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এসব কাজে তাদের লাগাতে না পারাটা হবে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উন্নয়নও ইতিবাচক হবে না। আজ যুবসমাজকে একটা লক্ষ্য দিতে হবে। তা না হলে এক যুবক বোমা মারছে, অন্য যুবক বোমায় মৃত্যুবরণ করছে। বিশ্বের অনেক দেশ তাদের বিভিন্ন গবেষণা, সিদ্ধান্তগ্রহণসহ অনেক কাজে তরুণদের সম্পৃক্ত করে জাতীয় উন্নয়ন অর্জন করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন কিছু হচ্ছে না।
২০-২৫ বছর পর আমরাই বয়স্ক হব। তখন আমরা দেশ ও জাতির জন্য কী করলাম, এ প্রশ্ন থেকে যাবে। প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলোতে যে তরুণেরা প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।
প্রযুক্তিকে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করে তরুণেরা কীভাবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমরা এখন জনমিতি মুনাফার মধ্যে আছি। যুবসমাজের অন্ধকার ও আলো দুটো দিকই আমি জানি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণেরা যেমন বিতর্কসহ অনেক সামাজিক কাজ করে, তেমন তারা মাদক, উগ্রবাদ, অপরাজনীতির জন্য ধ্বংস হচ্ছে। এদের জন্য গভীর রাতে আমাকে থানায় যেতে হয়।
তরুণদের জন্য শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হবে। আমি ৮-১০টা দেশের শিক্ষাপদ্ধতির ধারণা নিয়েছি। এর আলোকে নিজে একটা শিক্ষাপদ্ধতি তৈরি করেছি। এটা শিক্ষামন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে এ কাজটি শুরু করতে হবে।
আদর্শ, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা—এসব শেখানোর বয়স ১৮ না। প্রাথমিক স্কুল থেকেই এসব শেখাতে হবে। প্রায় অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা আছে, খেলার মাঠ আছে, এর সঙ্গে দিতে হবে শিক্ষার উপকরণ। বিদ্যালয় ভবনে শিক্ষকদের বিনা মূল্যে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে পারছে। আমরা কেন পারব না? যঁারা শেখাবেন, তাঁরা যদি বঞ্চিত বোধ করেন তাহলে তাঁরা কখনোই ভালো সেবা দিতে পারবেন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি, সৃজনশীল শিক্ষা, ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান, খেলাধুলা—সবাই শেখাতে হবে।
বছরে দুই মাস ক্যাম্প করে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলার মধ্যে আনতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই নারী হবেন। আমাদের প্রযুক্তি উৎপাদন করতে হবে। এর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তা না হলে প্রযুক্তির অপব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। শেষ কথা হলো, শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

শুচি করিম: নারীদের শিক্ষা, খেলাধুলা অন্যান্য ক্ষেত্রে যেকোনো প্রকার সফলতা প্রচার করা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই দক্ষতা, কর্মক্ষমতা ইত্যাদির ওপর জোর দিচ্ছেন। আমি মনে করি, মানুষ কেবল যন্ত্রের মতো কাজ করবে না। এভাবে কাজ করার জন্য মানুষের মধ্যে হতাশা ও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ে।
সবকিছুর আগে মানুষ হিসেবে তার মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সব ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আমরা কোনো রকম ব্যর্থতা মেনে নিতে চাই না। একবার ব্যর্থ হলেই অনেক তরুণের পড়াশোনা বন্ধ করা হয়, তরুণীদের বিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যেক তরুণকে তার ভালো লাগার স্বাধীনতা দিতে হবে, নিজের মতো করে বেড়ে ওঠার পরিবেশ দিতে হবে।

মাশরাফি বিন মুর্তজা: তরুণদের অনেক শক্তি আছে। তাদের শক্তি ঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না, এ ব্যাপারে প্রশ্ন থাকতেই পারে। রাত ১২টার পর কম পয়সার কথা বলার সুযোগ দিয়ে তাদের কী বার্তা দিচ্ছি? তাদের আসলে ভীষণভাবে ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছি। এর সঙ্গে রয়েছে প্রযুক্তির চরম অপব্যবহার।
এসব বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। এ ধরনের আলোচনা কতটুকু ফলপ্রসূ, সেটা জানি না। তবে প্রত্যেকে যদি প্রত্যেকের কাজটি করে যাই, সেটি সঠিক কাজ। এ গোলটেবিলে সবাই খুবই ভালো আলোচনা করছেন। আমরা প্রত্যেকে সমাজের ১০ জন ২০ জন করে মানুষকে বোঝাতে পারি। তাহলে সবার মধ্যে একটা জাগরণ তৈরি হতে পারে।
আবার কেবল কথা বললেই হবে না, প্রকৃত অর্থে কাজটা শুরু করে দিতে হবে। ছেলে ও মেয়ের বৈষম্য দূর করতে হবে। মেয়েদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একটা মেয়ের সত্যিকার শিক্ষা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা থাকলে সে তার সন্তানকে প্রকৃত মানুষ করতে পারবে। শিশুদের হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতেই হবে। এটা অত্যন্ত অমানবিক একটা কাজ। সন্তানদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সমাজের সবাই শিক্ষিত হবে না, এটা আমাদের মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে।
অনেকে খাবারে ভেজাল দিয়ে বেশি মুনাফা করতে চায়। তাদের কাছে গিয়ে তাদের কীভাবে ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত রাখা যায়, সেটি ভাবতে হবে। সবার শিক্ষা না থাকলেও কীভাবে সবার মধ্যে আদর্শের জায়গাটা ঠিক থাকে, এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার দায়িত্ব আছে বলে মনে করি।
জুনাইদ আহমেদ পলক: মাশরাফি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। আমাদের দেশের গর্ব। তাঁকে অভিনন্দন।
দেশের হাসপাতালগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ দিচ্ছি। প্রতি হাসপাতালে কিশোর-কিশোরীদের কোনো কর্নার থাকলে তারা সহজে সেবা নিতে পারবে। ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না। বরং মেয়ে বা নারীদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ফেসবুকের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে। ফেসবুকের সঙ্গে টেক্সটবুককে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
শিশুহত্যা, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে প্রযুক্তি ব্যবহরের উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে কোনো ঘটনা ঘটার আগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
মাদক, সন্ত্রাস, পর্নোগ্রাফি তরুণদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে বিপর্যস্ত করছে। এসব থেকে তাদের মুক্ত করার জন্য গঠনমূলক উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের মন্ত্রণালয়ে তরুণদের স্বাগত জানাই। তারা যেসব পরামর্শ দেবে, সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে ভাবব।

সামিউদ্দিন আহমেদ: তরুণদের আরও বেশি সামাজিক কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে হবে। দল ও মানুষের জন্য এ দুই ধরনের রাজনীতি রয়েছে। তরুণদের অবশ্যই মানুষের জন্য রাজনীতি করতে হবে।
রানা প্লাজা ধ্বংসের সময় তরুণেরা সবার আগে এগিয়ে এসেছে। সেভাবেই তরুণদের গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা সব সময় মানুষের জন্য কাজ করে। আমাদের যুবসমাজের বড় একটি অংশ গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করে। যেকোনো পরিকল্পনা গ্রহণের সময় তাদের কথা মনে রাখতে হবে। তরুণদের উন্নয়নে সরকার, উন্নয়ন-সহযোগী ও করপোরেট খাতের সমন্বিতভাবে কাজ করা খুব জরুরি। একটা আশার খবর হলো, ২০০৩ সালের যুবনীতি ২০১৫ সালে আবার পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

আবদুল্লাহ আল রেজওয়ান: আমাদের প্রত্যেকের জায়গা থেকে কাজ শুরু করতে হবে। আমরা কী আজকের আলোচনার পর কাজটি যার যার জায়গায় ফিরে গিয়ে শুরু করব? অভিজ্ঞতা বলে করব না। তাহলে কাজটি কে করবে, এটিই প্রধান প্রশ্ন। কেবল প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তরুণেরা এখন সাংসদ, মন্ত্রী হচ্ছেন। কিন্তু সমাজের ভেতর থেকে এ জাগরণটা এখনো ওঠেনি। আমরা সনদভিত্তিক পড়া পড়ছি, আর পড়ার সীমা ঠিক করেছি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স ডিগ্রি)। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত মানুষের ইতিহাস কেবল মাস্টার্স ডিগ্রি না।
আবার বাংলাদেশের মাস্টার্স ডিগ্রির মান বিদেশে খুব একটি মূল্যায়ন করা হয় না। তঁারা যেকোনো একটি জায়গা থেকে কর্মমুখী শিক্ষা শুরু করেছেন। জীবনে সফলও হয়েছেন। আমাদেরও কর্মমুখী শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

শাহানা নাজনীন: আমরা সব চাপ দিই শিক্ষকদের। মনে করি, তঁারাই সব করবেন। এ ধারণা একেবারেই ঠিক না। পরিবারে অভিভাবক আছেন। সমাজে বড়রা আছেন। এঁরা সবাই আসলে একধরনের শিক্ষক। আচার-আচরণ-সংস্কৃতি শেখার প্রথম জায়গা হলো পরিবার। তারপর বিদ্যালয় ও সমাজ। এর বাইরে রয়েছে জীবন–দক্ষতামূলক শিক্ষা।
তরুণদের সমস্যাকে বড় করে না দেখে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সেটাতে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। নেতৃত্বে তরুণদের নিয়ে আসতে হলে তাদের সুযোগ-সুবিধা ও তথ্য দিয়ে সমৃদ্ধ করতে হবে। নেতৃত্ব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সত্যিকার নেতৃত্বগুণসম্পন্ন মানুষ গড়ে তুলতে পারলে তারা দেশের সম্পদে পরিণত হবে।

রওনক আল জাওয়াদ: বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। এটা এক অর্থে কর্মসংস্থান ও আয়ের একটি ভালো উৎস। দেশের তরুণসমাজের একটা অংশ অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিয়েছে। এ পেশায় আরও অনেক তরুণকে সম্পৃক্ত করতে হলে
প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা দরকার। যেখানে যুবসমাজ প্রশিক্ষণ নিয়ে এ ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালোভাবে কাজ করতে পারবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুবসমাজের আত্মকর্মসংস্থানেরও সুযোগ রয়েছে।
কোনো প্রযুক্তি নিজ থেকে ভালো-খারাপ হতে পারে না। একে কীভাবে ব্যবহার করছি, সেটি বড় ব্যাপার। তরুণদের এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে

ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার: সব ক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণ জরুরি। সিদ্ধান্তগ্রহণেও তাদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে সিদ্ধান্ত যদি তাদের নিজের জীবনের জন্য হয়। যেমন তাদের বিয়ে, তাদের জীবনের অন্যান্য পরিকল্পনা ইত্যাদি। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তারা এ সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা এসব সিদ্ধান্তগ্রহণে বাধা দেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তরুণদের মতামত গ্রহণের জন্য আহ্বান করেছেন। এটা খুবই ভালো দিক। কিন্তু মন্ত্রীর দপ্তরে যোগাযোগের জটিলতা আছে। ভালো হয় তিনি যদি এক এক একদল তরুণের কাছে আসেন। তাদের কথা শোনেন, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। আজকের গোলটেবিলে কয়েকজন তরুণের উপস্থিতি আছে, এটাও একটা ভালো বিষয়। এভাবে তরুণদের সব জায়গায় সুযোগ করে দিতে হবে।

আরিফ খান জয়: সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য তরুণেরা ভূমিকা রাখছে। তাই তাদের আরও সুযোগ করে দিতে হবে। কাজের পরিবেশ দিতে হবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা জোগাতে হবে। দেশের গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও অনেক মেধাবী তরুণ-তরুণী রয়েছে।
এসব তরুণের জন্য বিশেষভাবে কাজ করা প্রয়োজন। যেমন মুস্তাফিজ কত দূর থেকে এসে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে। সঠিক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে পারলে মুস্তাফিজের মতো অসংখ্য তরুণ গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসবে।
দেশের পাঁচ কোটি তরুণ পিছিয়ে থাকলে দেশ সামনের দিকে এগোতে পারবে না। এসব তরুণকে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের দেশের তরুণেরা অনেক বেশি সৃজনশীল। অনেক তরুণ বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। দেশের জন্য সম্মান অর্জন করছে। তরুণদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন এগিয়ে অাসে। আমাদের দিক থেকে যা করা দরকার আমরা তা সাধ্যমতো করব।
আব্দুল কাইয়ুম: মানবসম্পদের টেকসই উন্নয়নের জন্য তরুণ ও যুবদের শিক্ষা, জীবনদক্ষতা ও কারিগরি দক্ষতায় সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার এখনই সময়। তরুণদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারলে দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করবে।
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তরুণদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
আজকের তরুণসমাজ ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নির্মাতা
বংলাদেশের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ যুবসমাজ। এরাই ভিবষ্যৎ বাংলাদেশের নির্মাতা। এই তরুণসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় আরও বেশি সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে
যুবসমাজ উন্নয়নে করণীয়
মাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষা ও কর্মমুখী শিক্ষায় যুবদের উৎসাহিত করা ও জেন্ডার সাম্য বজায় রাখা
যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা এবং যুব নারীর জন্য উপযুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি করা
নীতি ও কৌশল গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা
স্বাস্থ্যসেবায় যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য তথ্য ও সেবা নিশ্চিত করা
যৌন ও জেন্ডার সহিংসতা প্রতিরোধ এবং বাল্যবিবাহ নির্মূল করা
আলোচনায় সুপারিশ
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষ করে বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে
নীতির প্রয়োগ ও সম্পদের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে
তরুণ, শিশু–কিশোর—সব মিলে দেশের এই বিপুল অংশের মানুষের নৈতিক, আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করা জরুরি
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে
শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে
মাদক, সন্ত্রাস, পর্নোগ্রাফি তরুণদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে বিপর্যস্ত করছে। এসব থেকে তাদের রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে
ছেলে ও মেয়ের বৈষম্য দূর করতে হবে
যাঁরা অংশ নিলেন
জুনাইদ আহমেদ পলক : প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
আরিফ খান জয় : উপমন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মুনির হোসেন : ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল
মাশরাফি বিন মুর্তজা : অধিনায়ক, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (ওয়ানডে)
শুচি করিম : জেন্ডার অ্যান্ড এসআরএইচআর স্পেশালিস্ট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
হরিপদ দাস : প্রোগ্রাম অফিসার, বিসেফ প্রজেক্ট, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, ঢাকা
সোনম সাহা : প্রভাষক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
শাহানা নাজনীন : গবেষক, অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস ইভ্যালুয়েশন প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ, (আইপিএ) ইনোভেশন ফর পভার্টি অ্যাকশন
সামিউদ্দিন আহমেদ : সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, ইয়ুথ ইউনিট, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ
জাহানারা আলম : সহঅধিনায়ক, বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল
মোহাম্মদ মামুন মিয়া : প্রেসিডেন্ট, ইউএনওয়াইএসএবি
আবদুল্লাহ আল রেজওয়ান : ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইউএন ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি প্যানেল
রওনক আল জাওয়াদ : মেম্বর, ইউএন ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি প্যানেল
রাকিবুল হাসান : ইয়াং লিডার ফেলো, উইমেন ডেলিভার, এমএসএস শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো