আবরার ফাহাদের চোখ সামান্য খোলা ছিল

আবরার ফাহাদ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের সুরতহাল প্রস্তুতকারী চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এসআই দেলোয়ার হোসেন আদালতকে বলেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর রাত চারটা সাত মিনিটে খবর পান, বুয়েটের শেরেবাংলা হলে কোনো একটা সমস্যা হয়েছে। তখন তিনি দুজন পুলিশ কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে শেরেবাংলা হলে যান। দেখেন, হলের উত্তর গেটের বারান্দার পূর্ব-পশ্চিম সিঁড়িতে আবরার ফাহাদের মরদেহ রাখা। তখন হলের প্রভোস্টসহ অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আবরারের মরদেহের সুরতহাল তৈরি করেন।

দুই পায়ের আঙুল স্বাভাবিক ছিল। তবে হাতের কবজি পর্যন্ত কালো জখমের দাগ ছিল। আর পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কাল জখম ছিল। দুই হাঁটুতে কালো জখম ছিল।

দেলোয়ার হোসেন আদালতকে আরও বলেন, আবরার ফাহাদের পরনে ছিল চেক শার্ট ও ট্রাউজার। তাঁর চোখ সামান্য খোলা ছিল। মুখ খোলা ছিল। নাক-কান স্বাভাবিক ছিল। দুই হাত শরীরের সঙ্গে মেশানো ছিল। বুক-পেট স্বাভাবিক ছিল। দুই পায়ের আঙুল স্বাভাবিক ছিল। তবে হাতের কবজি পর্যন্ত কালো জখমের দাগ ছিল। আর পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কাল জখম ছিল। দুই হাঁটুতে কালো জখম ছিল। বুয়েটের প্রভোস্ট জাফর ইকবালের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আবরার ফাহাদ বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

এসআই দেলোয়ার হোসেন আদালতকে জানান, সেদিন তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১০ নম্বর কক্ষ থেকে একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প জব্দ করেন। ল্যাপটপটি ছিল নিহত আবরার ফাহাদের। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় এসব আলামত আদালতে হাজির করে পুলিশ।

গত বছরের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ মামলায় গত বছরের ১৩ নভেম্বর বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ২১ জানুয়ারি অভিযোগপত্রটি আমলে নেন আদালত। তিন আসামি পলাতক। ২ সেপ্টেম্বর বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

এদিকে আবরার ফাহাদ স্মরণে রাজধানীর পলাশী মোড়ে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে৷ হত্যার বছরপূর্তি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠন এই স্তম্ভ নির্মাণ করে৷ নির্মিত স্তম্ভটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’৷