আবরারকে পিটিয়ে মারেন রবিন, অনিকসহ অন্যরা

আবরার ফাহাদ
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আজ সোমবার আরও দুজন সাক্ষী ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে এ মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো। আগামীকাল মঙ্গলবারও মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।

যে দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁরা হলেন—ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম ও বুয়েটের শেরেবাংলা হলের মেসবয় মো. ফরিদ।

ফরিদ আদালতকে বলেন, গত বছরের ৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টায় কাজ শেষে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। রাত আড়াইটার দিকে হলের অন্য মেসবয় শামসুল হক তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। শামসুল তাঁকে জানান, ‘হলে শিবির ধরেছে।’ বিষয়টি জানানোর জন্য প্রথমে তিনি হলের প্রভোস্ট জাফর ইকবালকে ফোন দেন। ফোন বন্ধ পাওয়ায় পরে মেসবয় কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে প্রভোস্টের বাসায় যান। প্রভোস্টকে ঘটনা জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে ফোন দেন। আনুমানিক দেড় ঘণ্টা পর চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে প্রভোস্ট শেরেবাংলা হলে আসেন। তখন দেখতে পান, হলের ১০১১ নম্বর কক্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ ট্রলির ওপর চাদর দিয়ে ঢাকা। নিরাপত্তা কর্মকর্তার মাধ্যমে হলে পুলিশ আসে। লাশের ছবি তোলে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে থাকা আঘাতের ছবিও তোলে। পরে হলের ক্যানটিনের সামনে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।

মেসবয় ফরিদ আদালতে আরও বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর জানতে পারেন, হলের ছাত্র রবিন, অনিক, জিয়ন, সকালসহ অন্যরা শিবির সন্দেহে আবরারকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন। আসামির কাঠগড়ায় থাকা ওই চার আসামিসহ অন্যদের শনাক্ত করেন মেসবয় ফরিদ।

অন্য সাক্ষী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম আদালতে বলেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর বেলা ১১টায় এ মামলার আসামি অনিক সরকারকে তাঁর সামনে হাজির করে পুলিশ। আইন অনুযায়ী তিনি অনিকের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেন।
দুজনের সাক্ষ্য দেওয়া শেষ হলে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের জেরা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী ও আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া।

গত বছরের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ মামলায় গত বছরের ১৩ নভেম্বর বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ২১ জানুয়ারি অভিযোগপত্রটি আমলে নেন আদালত।

তিন আসামি পলাতক। গত ২ সেপ্টেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, যোগসাজশে পরস্পরের সহায়তায় শিবির সন্দেহে আবরারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।