আবারও টাঙানো হলো উপাচার্যের হাজিরা খাতা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর হাজিরা খাতার বোর্ড টাঙিয়ে দেয়। শেখ রাসেল চত্বর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর, ৩ জুন
ছবি: মঈনুল ইসলাম

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে নিয়ে আবারও হাজিরা খাতা টাঙানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ এ হাজিরা খাতা টাঙিয়ে দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি তুহিন ওয়াদুদ প্রমুখ।

টাঙানো হাজিরা খাতায় উপাচার্যের চাকরির নিয়োগে দেখানো হয়েছে ১ জুন, ২০১৭। যোগদানের তারিখ ১৪ জুন, ২০১৭। মেয়াদপূর্তি ৩১ মে, ২০২১। মেয়াদপূর্তির স্থানে বলা হয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ। যোগদানের পর থেকে দিনের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪৭। মোট উপস্থিতি ২৪০ দিন। মোট অনুপস্থিতি ১ হাজার ২০৭ দিন।

এ ছাড়া হাজিরা খাতার বোর্ডে আজকের অবস্থানে বলা আছে মেয়াদোত্তীর্ণ। সেই সঙ্গে মূল্যায়নে মন্তব্যের ঘরে লেখা আছে ‘ডিসকোয়ালিফায়েড’। আর সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

এ হাজিরা খাতা টাঙানোর পর অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘উপাচার্য তাঁর চার বছরের মেয়াদে ক্যাম্পাসে উপস্থিতির এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা হাজিরা খাতার মাধ্যমে তাঁর অনিয়মের নমুনা দেখাতে চেষ্টা করেছি।’

শিক্ষকদের অন্য এক সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে দাবিও জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাঁকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। তিনি মাসের পর মাস নিজের কার্যালয়ে বসেননি। কখনো কালেভদ্রে এলেও বাসা থেকে চলে যেতেন।

উল্লেখ্য, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠিত তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, নিয়োগসহ মোট ১১১টি অভিযোগ তদন্ত করেছে ইউজিসির আরেকটি তদন্ত কমিটি।

এ ব্যাপারে জানতে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকার যোগাযোগ করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামালের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ধরেননি।