আলু–পেঁয়াজের দাম কমছে, বাড়ছে চালের

বাজারদর

ডিসেম্বরের শুরুতে বাজারে নতুন আলু আসার পরও দাম না কমার পেছনে দেশজুড়ে ঘন কুয়াশার অজুহাত দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক দিনে কুয়াশার দাপট কিছুটা কমেছে, সে সঙ্গে কমেছে আলুর দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে নতুন আলুর দাম কমেছে কেজিতে ১০-১৫ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, আলুর সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করছে। সামনে আরও কমবে দাম। আজ বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে নতুন আলু প্রতি কেজি (খুচরা পর্যায়ে) বিক্রি হয়েছে ৪০-৪২ টাকা। কারওয়ান বাজার থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে শান্তিনগর বাজারে একই আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়। আর শান্তিনগরের কাছেই সিদ্ধেশ্বরীর পাড়া-মহল্লার দোকানে এবং ভ্যানে এক কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকায়।

তবে বাজারে নতুন আলুর দাম কমলেও পুরোনো আলুর দাম আগের মতোই রয়েছে। পাইকারিতে পুরোনো আলুর দাম এখনো ৪০-৪২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে তা ৪৫-৪৬ টাকা।

নতুন আলুর মতোই বাজারে আগাম আসা পেঁয়াজের (মুড়িকাটা) দামও কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে ক্রেতাদের। কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মধু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়। পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। খুচরা পর্যায়ে তা ৬৫-৭০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানিরা কেউ কেউ ৭৫ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন।

চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি পাইকারিতে ২৫ টাকা। খুচরায় সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। একটু ভালো মানের মিসরীয় পেঁয়াজের দাম ৪০-৪৫ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে, সামনে দাম আরও কমতে পারে।

দাম শুধু বাড়ছেই। শীতে চাল-সবজির দাম কমার কথা। সবজির দাম কমলেও চালের দাম না কমায় বিপদে আছে খেটে খাওয়া মানুষ।
কবিরুল হাসান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক

আলু ও পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে আশার কথা শোনা গেলেও চালের দাম কবে কমবে, সে বিষয়ে চাল ব্যবসায়ীরা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। উল্টো কয়েক দিনে সব ধরনের চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের চালের পাইকারি বিক্রেতা মাইনুদ্দিন মানিক প্রথম আলোকে বলেন, মিল গেটে নাজিরশাইল চালের দাম এখন কেজিতে ৬৪ টাকা। আড়তে আসতে আসতে এর দাম হয় ৬৫ টাকা। এরপর লাভ রেখে বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ৬৬ টাকা। মিনিকেট চালের দাম পাইকারিতে মানভেদে প্রতি কেজি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা। এমনকি এই মৌসুমের চাল স্বর্ণা (মোটা চাল) মিল গেটে প্রতি কেজির দাম ৪৬ টাকা। পাইকারিতে ৪৮ টাকা। আর খুচরায় ৫০ টাকা কেজি।

নিউমার্কেটের চাল বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান জানান, কিছু কিছু মিলমালিক চাল বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে কবে দাম কমবে, এ বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছেন না।

চালের মতোই খোলা সয়াবিন তেলের দামও বাড়তি। গত সপ্তাহে দাম ছিল ১১০ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে তা হয়েছে ১১৬ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি। আগের মতোই ৫ লিটারের দাম কোম্পানিভেদে ৬২৫ থেকে ৫৮০ টাকা। ১ কেজি বোতলের দাম ১১০-১২৫ টাকা।

কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারে গতকাল দুপুরে কেনাকাটা করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক কবিরুল হাসান বলেন, দাম শুধু বাড়ছেই। শীতে চাল-সবজির দাম কমার কথা। সবজির দাম কমলেও চালের দাম না কমায় বিপদে আছে খেটে খাওয়া মানুষ।