আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে গত রোববার থেকে সংঘটিত সহিংসতায় হতাহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটি এ আহ্বান জানায়। অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশকে অবশ্যই আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে। সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘শিবিরের ভেতরের অবস্থা বেশ বিপজ্জনক। সহিসংতা প্রশমনে এবং শরণার্থীদের রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষ যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়, তবে ফের রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতর অবৈধ মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাতের কারণে এ পর্যন্ত অন্তত দুই হাজার রোহিঙ্গা তাদের আশ্রয়শিবির থেকে অন্যান্য আশ্রয়শিবিরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সংঘাতের জের ধরে গত বুধবার কুতুপালং শরণার্থীশিবিরে কয়েক ডজন আশ্রয়কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘দুই পক্ষের মাঝামাঝি জায়গায় আটকে পড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আশ্রয়শিবিরের ভেতরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যত দিন প্রয়োজন, তত দিনের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সহিংসতার ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ শরণার্থীশিবিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে গত মঙ্গলবার। কিন্তু এরপরও সংঘর্ষ হয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলছেন, এই সুযোগে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তাঁদের ভাসানচরে সরিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। শরণার্থীদের অনেকেই অ্যামনেস্টিকে জানিয়েছেন, অনিরাপদ পরিস্থিতির আশঙ্কায় তাঁরা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী নন।

সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘ভাসানচরে শরণার্থীদের সরিয়ে নিলে তাদের নিরাপত্তাহীনতা যেমন শেষ হবে না, তেমনি শরণার্থী সংকটেরও কোনো টেকসই সমাধান হবে না। এর বদলে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে, তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো জানতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’