আসামিকে জামিন না দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিবের সই ও সিল জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় মো. করিম মিয়া নামের এক আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামে।

বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। মো. করিম মিয়ার আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই আদেশ দেওয়া হয়।

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে ওই মামলাটি করে পুলিশ। এই মামলায় আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন জানান করিম মিয়া। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমজাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে করিম মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির ওই মামলা হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘটনার সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করা গেলেও করিম মিয়া পলাতক ছিলেন। তিনি হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য আজ হাজির হন। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে করিম মিয়াকে জামিন না দিয়ে শাহবাগ থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দের নির্দেশ দেন। পরে করিম মিয়াকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় বলে জানান তাঁর আইনজীবী মো. আমজাদ হোসেন।

মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কে বড় ঈদগাহ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রাককে থামায় হাইওয়ে পুলিশ। ট্রাকটি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাঁশ বহন করছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকের চালক মো. আজিম উদ্দিন ও তাঁর হেলপার মো. মোতালেব হোসেন জানান, এই বাঁশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র আছে কি না, তা জানতে চাইলে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (সামরিক সচিব শাখা) লে. কর্নেল মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি দেখান। চিঠিটি ট্রাকের মালিক মো. করিম মিয়া দিয়েছেন বলে জানান।

আইনজীবীর তথ্যমতে, এতে সন্দেহ হলে বাঁশভর্তি ট্রাকটি আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। বগুড়া হাইওয়ের পুলিশ সুপার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি জানান, তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল নন, তিনি কর্নেল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি তিনি ইস্যু করেননি। তখন আসামিরা স্বাক্ষর জাল করার কথা স্বীকার করেন। এই ঘটনায় রংপুরের পীরগঞ্জের বড় দরগাহ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন ট্রাকমালিক করিম মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন।