ইউজিসির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের তালা

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশন (ইউজিসি) থেকে অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রশাসনিক ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ইউজিসির এক সভায় বশেমুরবিপ্রবিতে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগে নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিভাগটিতে বর্তমানে অধ্যয়নরত তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনুমোদন দেওয়া হলেও ইতিহাস বিভাগটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতেই এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা ইউজিসির নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। ইতিহাস বিভাগকে অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তাঁরা।

আন্দোলনরত ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আফতাবুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখানে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে পড়াশোনা করছি। প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি যে আমাদের বিভাগের কোনো অনুমোদন নেই। জানতে পারার পর বারবার প্রশাসনের কাছে গেলেও আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল জানতে পারলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের কোনো অনুমোদন দেওয়া হবে না। শুধু মাত্র চলমান তিনটি ব্যাচের অনুমোদন দেওয়া হবে। আমরা শুধু তিন ব্যাচের অনুমোদন নয়, আমাদের বিভাগের অনুমোদন চাই। বিভাগের অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একাডেমিক কার্যক্রম আমরা চালাতে দেব না।’

আরেক আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাদিয়া জেরিন বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক অনুষদে আরও অনেক বিভাগ আছে। তাহলে ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন দিলে সমস্যা কোথায়? আর অনুমোদন ছাড়া আমাদের ভর্তিই বা করল কেন? বিভাগ না থাকলে আমাদের সার্টিফিকেটের কী মূল্য আছে?’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিল এবং রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউজিসি কোনো বিভাগের অনুমোদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেন। আমি যেহেতু ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি, তাই একাডেমিক কাউন্সিল ও রিজেন্ট বোর্ড ডাকার এখতিয়ার আমার নেই। স্থায়ী উপাচার্য এলে তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই বশেমুরবিপ্রবিতে যাত্রা শুরু করে ইতিহাস বিভাগ। শুরু থেকেই ‘বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ’ এর অধীনে ইতিহাস বিভাগের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিভাগে পাঠদান করাতেন বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকেরা। বর্তমানে বিভাগটিতে প্রায় ৪১৩ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন।